গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে বেশ কিছু ব্যবস্থার কথা জানাল প্রশাসন। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
আর মাত্র কয়েকটা দিন। জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা। সে জন্য দফায় দফায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। এ বার পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে স্নানঘাটের সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। প্রতি বছর মুড়িগঙ্গা নদীতে পলি জমে যাওয়ার কারণে ভেসেল পরিষেবা বিঘ্নিত হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভেসেল ঘাটে অপেক্ষা করতে হয় পুণ্যার্থীদের। সেই অসুবিধার কথা মাথায় রেখে মুড়িগঙ্গার নাব্যতা বাড়ানোর জন্য চলছে ড্রেজ়িং।
সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা শাসকের দফতরে সরকারি পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। জানা গিয়েছে, বৈঠকে গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ড্রেজ়িং-এর কাজ দেখার পর জেলাশাসক বলেন, ‘‘এ বছর পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা ভেসেল পরিষেবা চালু থাকবে। কুয়াশা থাকার কারণে বিভিন্ন সময় ভেসেল দিক্নির্ণয় না করতে পেরে চড়ায় গিয়ে আটকে যায়। সেই সমস্যা সমাধান করতে এ বার ‘অ্যান্টি ফগ লাইট’ এবং ইসরোর অত্যাধুনিক ব্যবস্থা থাকবে। গঙ্গাসাগর মেলার সময় বাবুঘাট থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত থাকছে কন্যাশ্রীদের জন্য ‘বাফার জ়োন’। পুণ্যার্থী এবং দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে থাকছে ২১ টি জেটি, ৯টি অত্যাধুনিক বার্জ এবং ৩৫ টি ভেসেল। প্রতিটি বাফার জ়োনে থাকবে পানীয় জল এবং চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, মেলা উপলক্ষে পাঁচটি অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে। অন্যান্য বছরের মতো এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স এবং ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা থাকবে। সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও এন বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলার জন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিক-সহ প্রায় ১,১৫০ পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হবে। সিসিটিভির মাধ্যমে চলবে নজরদারি। খোলা হবে মেগা কন্ট্রোল রুম। গঙ্গাসাগর মেলা কোনও রকম গন্ডগোল যাতে না-হয়, সে জন্য ড্রোন দিয়ে নজরদারি হবে। জলপথে নজরদারি হবে স্পিডবোট এবং হোভারক্র্যাফ্টের মাধ্যমে। ২,৫০০ সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হচ্ছে।’’
পুলিশ সুপার এ-ও জানান, মেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যাতে না ঘটে সেই জন্য অস্থায়ী দমকল কেন্দ্র নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ই-স্নান ও ই-দর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভিন্রাজ্য থেকে আসা পুণ্যার্থীরা যাতে মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান করে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, সে দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
গঙ্গাসাগর মেলার জন্য লোকাল ট্রেন পরিষেবাও বাড়ানো হয়েছে। মেলার দিনগুলিতে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় চলবে অতিরিক্ত ৭১টি লোকাল ট্রেন।