জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ভর্তি নিতে না চেয়ে আদালতের নির্দেশ আবার বদলের আবেদন জানাল কম্যান্ড হাসপাতাল। তবে তাদের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে। কম্য়ান্ড হাসপাতালেই চিকিৎসা হবে মন্ত্রীর।
সোমবার কম্যান্ড হাসপাতাল দ্বিতীয় বার ব্যাঙ্কশাল আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। আদালতে হাসপাতালের তরফের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাদের হাসপাতালে এই মুহূর্তে অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। অনেক রোগী সেখানে চিকিৎসাধীন। তাই বাড়তি চাপ নেওয়া সম্ভব নয়। একই আবেদন নিয়ে শনিবারেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
কিন্তু কম্যান্ডের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। আগের নির্দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনে মন্ত্রীকে নিয়ে ওই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যেতে পারবেন তদন্তকারী আধিকারিক।
রেশন বণ্টনে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে শুক্রবার রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করে ইডি। তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিচারক ইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, জ্যোতিপ্রিয়ের শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে এবং তদন্তকারী আধিকারিক চাইলে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে কম্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যেতে পারে। সেই নির্দেশ বদল করার আর্জি জানিয়ে শনিবার আদালতের দ্বারস্থ হন কম্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সে দিনও হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তাদের উপর অতিরিক্ত রোগীর চাপ রয়েছে। কম্যান্ডের যুক্তি ছিল, ওই হাসপাতালে সেনাকর্মী, সেনা আধিকারিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা হয়। যাঁরা যুদ্ধে যান, দেশের সেবা করেন, মূলত তাঁদের জন্যই কম্যান্ড হাসপাতাল ব্যবহৃত হয়। হাসপাতালের উপর কতটা চাপ রয়েছে, তা বোঝাতে কর্তৃপক্ষ জানান, উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদেরও স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে থাকে কম্যান্ড হাসপাতাল।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক প্রশ্ন তোলেন, “এই চেয়ার থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেটা বদল করতে চাওয়া হচ্ছে কেন?” আদালতের বক্তব্য, “আপনারা দেশের সেবা করেন বলছেন। হাসপাতাল তো মানুষের জন্যই।” নির্দেশ একান্তই বদল করতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ইডি আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে, জানিয়েছিলেন বিচারক।
সোমবার আগের যুক্তি দিয়ে আবার আদালতে কমান্ড হাসপাতালের আবেদন ছিল, যত দিন পর্যন্ত না ইডি আদালতে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত আগের নির্দেশটি পিছিয়ে দেওয়া হোক। আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে।
জ্যোতিপ্রিয় এই মুহূর্তে বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ধৃত মন্ত্রীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট ব্যাঙ্কশাল আদালতে সোমবার ইডি জমা দিয়েছে। হাসপাতালে তাঁর কী কী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে, তার ফল কী হয়েছে, সবটাই বিস্তারিত ভাবে আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইডি জানিয়েছে, মন্ত্রী আপাতত স্থিতিশীল বলেই খবর। ইডির এই রিপোর্ট সিল করে আদালতে রেখে দেওয়া হবে।