Ration Distribution Case

‘অতিরিক্ত চাপ’, বালুকে ভর্তি নিতে চায় না কম্যান্ড হাসপাতাল, আদালতের দ্বারস্থ হলেন কর্তৃপক্ষ

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ইতিমধ্যেই কম্যান্ড হাসপাতালের উপর চাপ রয়েছে। তা ছাড়া তাঁদের যুক্তি, হাসপাতালে সেনাকর্মী, সেনা আধিকারিক এবং তাঁদের পরিবারদের চিকিৎসা করা হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৫০
Command Hospital has denied to admit Jyotipriya Mallick, went to Court to change previous order

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। এই কথা জানিয়ে রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ভর্তি নিতে চাইল না কম্যান্ড হাসপাতাল।

Advertisement

শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিচারক ইডিকে নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছিলেন, জ্যোতিপ্রিয় (যিনি বালু নামে সমধিক পরিচিত)-র শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে এবং তদন্তকারী আধিকারিক চাইলে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে কম্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যেতে পারে। সেই নির্দেশ বদল করার আর্জি জানিয়ে শনিবার আদালতের দ্বারস্থ হন কম্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, ইতিমধ্যেই হাসপাতালের উপর চাপ রয়েছে। তা ছাড়া তাঁদের যুক্তি, হাসপাতালে সেনাকর্মী, সেনা আধিকারিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা হয়। যাঁরা যুদ্ধে যান, দেশের সেবা করেন, মূলত তাঁদের জন্যই কম্যান্ড হাসপাতাল ব্যবহৃত হয় বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

এই পরিস্থিতিতে নতুন করে কোনও রোগীকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয় বলে আদালতে জানান কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের উপর কতটা চাপ রয়েছে, তা বোঝাতে কর্তৃপক্ষ জানান, উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদেরও স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে থাকে কম্যান্ড হাসপাতাল। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক প্রশ্ন তুলে বলেন, “এই চেয়ার থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেটা বদল করতে চাওয়া হচ্ছে কেন?” একই সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে বিচারক বলেন, “আপনারা দেশকে সেবা করেন বলছেন। হাসপাতাল তো মানুষের জন্যই।” কম্যান্ড কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে সূত্রের খবর।

প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে টানা তল্লাশি। সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ। তার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। শুক্রবার দুপুরে আদালতে তাঁকে হাজির করে ইডি। রেশন দুর্নীতির তদন্তে মন্ত্রীকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় তারা। মন্ত্রী জানান, তিনি অসুস্থ। ডায়াবেটিসের রোগী। তাঁর খাবার আলাদা। দৈনিক অনেক কিছু মেনে চলতে হয়। তা ছাড়া, ইডি যে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পায়নি সে কথাও আদালতে জানান মন্ত্রী। ইডিও পাল্টা যুক্তি দেয়। তবে দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন মন্ত্রী। পরে তাঁকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই মন্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করে পরে জানানো হয়, জ্যোতিপ্রিয়ের সুগারের সমস্যা বেড়েছে। মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব এবং শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে। পরীক্ষা করে শারীরিক অন্যান্য জটিলতাও ধরা পড়েছে। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। তাই তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। আদালতের নির্দেশ, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ১০ দিন তাঁকে নিজেদের হেফাজতে পাবে ইডি।

Advertisement
আরও পড়ুন