বৃহস্পতিবার দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত ভেসেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
জলপথ পরিবহণে নজির গড়ল বাংলা। দেশের মধ্যে প্রথম বিদ্যুৎচালিত ভেসেল চলবে কলকাতার গঙ্গায়। বৃহস্পতিবার আউট্রাম ঘাট থেকে সেই ভেসেলটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, মিলেনিয়াম পার্কের় জেটি থেকে বেলুড়মঠ হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত যাবে এই ভেসেল। দেশের আর কোথাও জলপথ পরিবহণে পরিবেশবান্ধব এই ধরনের ফেরি পরিষেবা নেই। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পরিবেশ দূষণ কমাতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করবে বিদ্যুৎ চালিত এই ভেসেল। এর ফলে যাত্রীরা যেমন আরও বেশি সুরক্ষিত হবেন, তেমনই অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করবেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আগামী দিনে আরও ১২টি ই-ভেসেল এবং ১২টি ই-বার্জ চালানোর বিষয়ে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করছে। নতুন এই জলযানে দু’টি শ্রেণি থাকছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অংশে সফর করতে পারবেন ৩০ জন। সাধারণ শ্রেণিতে ৬০ জন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আউট্রাম ঘাট থেকে গঙ্গাসাগর মেলারও আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ফের এক বার খতিয়ান দেন, তিনি সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পরে কী ভাবে গঙ্গাসাগরের উন্নতি হয়েছে। মমতার কথায়, ‘‘২০১১ সালে গিয়ে দেখেছিলাম, ওখানে কিচ্ছু ছিল না। আজকে সব করে দিয়েছি। আগে বলা হত, সব তীর্থ বার বার, গঙ্গাসাগর এক বার। আর এখন সবাই বলেন, সব তীর্থ এক বার, গঙ্গাসাগর বার বার। কারণ, এখন আর যাতায়াতে কোনও অসুবিধা নেই।’’
গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে বাইরের রাজ্য থেকে আসা লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় সামলাতে প্রশাসন প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি। দু’দিন আগে গঙ্গাসাগরে শেষবেলার প্রস্তুতি দেখতে গিয়েই মমতা জানিয়েছিলেন, বাবুঘাট, প্লট-৮, কচুবেড়িয়া, মেলা প্রাঙ্গনে মন্ত্রী-আমলাদের ভাগ করে দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবারও সেই কথার উল্লেখ করেন। বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীরাও হাজির ছিলেন।
মেলা প্রাঙ্গনে আগুন জ্বালিয়ে রান্নাবান্না না করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশিই, যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি পূণ্যার্থীদের খাবার দিতে আসে, তাদের উদ্দেশে রান্না করা খাবার আনার কথা বলেছেন মমতা।