কলকাতায় বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করলেন সম্বিত পাত্র। ফাইল ছবি।
কলকাতায় এসে কংগ্রেস প্রসঙ্গে অবস্থান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করলেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। তাঁর প্রশ্ন, মমতা আদৌ কি ঠিক করেছেন তিনি কোন পক্ষে আছেন? বার বার মত বদল করা নিয়েও তৃণমূলনেত্রীকে বিঁধেছেন সম্বিত।
সল্টলেকে রাজ্য বিজেপির অফিস থেকে সোমবার সকালে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন সম্বিত। সেখানে তিনি রাহুল গান্ধীর মামলায় সুরতের আদালতের রায় এবং সেই রায়ের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে কটাক্ষ করেন। সেই বৈঠকের শেষে সম্বিতকে মমতার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়। রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের পর মমতা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। এমনকি, তিনি বিরোধী দলগুলিকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একজোট করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সম্বিতের পাল্টা প্রশ্ন, মমতা আদৌ কি কংগ্রেসের পাশে আছেন? তিনি বলেন, ‘‘আমি তো অবাক হয়ে যাই। মমতা সকালে এক রকম কথা বলেন, সন্ধ্যায় আর এক রকম। সকালে ফুল নিয়ে গান্ধী পরিবারের কাছে যান, সন্ধ্যায় আবার বলেন রাহুলের দ্বারা হবে না। আগে মমতাজিকে জিজ্ঞাসা করে আসুন, রাহুলের দ্বারা কিছু হবে? না হবে না?’’
রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ এবং তৎপরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে জাতীয় রাজনীতিতে যে কেন্দ্রবিরোধী আবহ তৈরি হয়েছে, তা থেকে দূরে নেই তৃণমূল। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের মুখে কংগ্রেসের সমালোচনা শোনা গিয়েছিল। এমনকি কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’ নিয়েও সরব হয়েছিল মমতার দল। তাই কয়েক দিনের ব্যবধানে তৃণমূলের এই বিপরীত অবস্থান নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির মুখপাত্র।
সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে একের পর এক প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেস, রাহুল এবং গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন সম্বিত। কংগ্রেস সূত্রে খবর, রাহুল সুরত আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সোমবার উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। তিনি সুরতের দায়রা আদালতে মোদী পদবি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে পারেন। সেই প্রসঙ্গে সম্বিতের প্রশ্ন, ‘‘কেন দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি রাহুলের আস্থা নেই? কেন ওবিসি সম্প্রদায়কে অপমান করেও তিনি ক্ষমা চেয়ে নেননি? আদালতে সে সুযোগ তো তাঁর ছিল!’’
একইসঙ্গে গান্ধী পরিবার ওবিসি এবং পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়গুলিকে ঘৃণা করে বলেও দাবি করেছেন সম্বিত। তিনি বলেন, ‘‘দেশের গণতন্ত্রের প্রতি রাহুল এবং তাঁর দল এত অবিশ্বাসী কেন? রাহুল মানেই ভারত নয়, ভারত মানেই রাহুল নয়, সেটা মনে রাখা দরকার। গান্ধী পরিবারের জন্য দেশের আইন বদলাবে না।’’
কংগ্রেস বিদেশের মাটিতে নিজেদের এজেন্ট বসিয়ে রেখেছে, দাবি সম্বিতের। তিনি বলেন, ‘‘বিদেশে ওরা নিজেদের এজেন্ট বসিয়ে রেখেছে। এখানে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁরা বিদেশ থেকে সমালোচনা করেন কংগ্রেসেরই মদতে। কিন্তু দেশ এগিয়ে গিয়েছে। এখন দেশে রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসেছেন একজন আদিবাসী মহিলা। তাই এই নতুন ভারতে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে তাচ্ছিল্য করে পার পাওয়া যাবে না।’’