Darjeeling Strike

মাধ্যমিক শুরুর দিনেই ‘বন্‌ধ’-এর ডাক পাহাড়ে, অনশনে বসলেন বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ডরা

পাহাড়ের মানুষের কাছে বিনয়েরা আবেদন জানিয়েছেন, আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁরা যেন বাড়ি থেকে না বেরোন। তবে যাঁরা বাংলাভাগের বিরুদ্ধে, তাঁরা যদি এই আবেদন না মানেন, তাতে আপত্তি নেই বলেই দাবি বিনয়ের।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:০৯
Bimal Gurung, Binay Tamang and others calls bandh in Darjeeling

২৪ ঘণ্টার অনশনে জিটিএ বিরোধীরা। — নিজস্ব চিত্র।

পাহাড়ে আবার অনশন আন্দোলন। এ বার গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনশনে বসলেন বিনয় তামাং, হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অজয় এডওয়ার্ড-সহ জিটিএ-র ৭ সদস্য। তাঁরা আপাতত ২৪ ঘণ্টার জন্য অনশনে বসেছেন। গোর্খাল্যান্ডের দাবির পাশাপাশি, বিধানসভায় সোমবার পাশ হওয়া বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের বিরোধিতাও করছেন বিনয়রা। প্রতিবাদে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পাহাড়ের মানুষের কাছে বাড়ি থেকে না-বেরোনোর আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। ঘটনাচক্রে, ওই দিন থেকেই রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা করে আন্দোলন হবে না। যদিও বিনয়দের এই কর্মসূচিকে ভাল ভাবে নিচ্ছেন না জিটিএ-র চিফ এগ্‌জিকিউটিভ অনীত থাপা। তিনি জানিয়েছেন, পাহাড়বাসী এ সব পছন্দ করেন না।

মঙ্গলবারই উত্তরবঙ্গে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে সকালে অনশনে বসেন জিটিএ-বিরোধী হিসাবে পরিচিত ওই আন্দোলনকারীরা। আনন্দবাজার অনলাইনকে বিনয় বলেন, ‘‘আমরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনড়। ফলে সোমবার কলকাতায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী যে প্রস্তাব আনা হয়েছে তারও বিরুদ্ধে। মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় গোর্খাদের সম্পর্কে বিধানসভায় যা বলেছেন তা নিন্দনীয়। গোর্খাল্যান্ডের দাবি এবং মন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদেই আমাদের অনশন। একই সঙ্গে আমরা আগামী ২৩ তারিখ পাহাড়ের সকলকে বাড়ি থেকে না বেরোনোর আবেদন জানিয়েছি।’’

Advertisement

তবে কি পাহাড়ে আবার বন্‌ধ সংস্কৃতি ফিরে এল? বিনয় যদিও জানিয়েছেন, তাঁরা বন্‌ধের ডাক দেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা পাহাড়ের মানুষকে বাড়ি থেকে না বেরোনোর আবেদন জানিয়েছি। যদি কেউ বাংলায় থাকতে চান, তবে তিনি বাড়ি থেকে বেরোতেই পারেন। আমাদের আপত্তি নেই। আর যদি কেউ গোর্খাল্যান্ডকে সমর্থন করেন, তবে তিনি বেরোবেন না। কোথাও কোনও জোরাজুরির ব্যাপার নেই। আমরা বন্‌ধ ডাকিনি।’’

ঘটনাচক্রে, ওই দিন থেকেই রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। বিনয়রা জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের কোনও রকম অসুবিধা করে তাঁরা আন্দোলন করবেন না। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ২৩ তারিখ পাহাড়ে বাজারঘাট, দোকানপাট, গাড়িঘোড়া— কোনও কিছুই তাঁরা বন্ধ রাখার কথা বলেননি। বিনয়ের কথায়, ‘‘সবটাই আবেদন। যদি কেউ মনে করেন বেরোবেন না বাড়ি থেকে, তাঁদের স্বাগত। যদি কেউ দোকান না খোলেন, স্বাগত। কিন্তু কেউ যদি আবেদনে সাড়া না দেন, আমাদের কিছু বলার নেই।’’

অন্য দিকে, পাহাড়ে বিরোধীদের ডাকা এই ‘বন্‌ধ’-এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন অনীত। তিনি বলেন, ‘‘দলগুলি হতাশাগ্রস্থ হয়ে এই ধরনের কাজ করছে। পাহাড়ে আর কোনও বন্‌ধ হবে না। পাহাড়ের মানুষ আর বন্‌ধ বা অশান্তি চায় না।’’

প্রসঙ্গত, সোমবার বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের আলোচনায় রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব তাঁর বক্তৃতায় গোর্খাদের ‘বহিরাগত’ ও আদিবাসীদের ‘পরিযায়ী’ বলেছিলেন। মঙ্গলবার বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে উল্লেখ পর্বে কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওঁরাও বিষয়টির কথা উল্লেখ করেন। সঙ্গে তিনি দাবি করেন, মন্ত্রীকে তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু সেই প্রস্তাব আনার অনুমোদন দেননি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই অধিবেশনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। বিক্ষোভ দেখানোর কিছু ক্ষণ পর তাঁরা ওয়াকআউটও করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement