বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (সামনে), কলকাতা হাই কোর্ট (পিছনে)। — ফাইল ছবি।
নরেন্দ্রপুরের ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে জানালেন বারুইপুরের পুলিশ জেলার সুপার। তিনি জানান, শেখ আব্দুল সুফিয়ান ও শোভন আলি সর্দার নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, ওই ঘটনার তদন্তে চারটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। তদন্ত পর্যবেক্ষণে এক জন ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক রয়েছেন। তবে এখনও ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক অধরা।
সোমবার রাতের মধ্যে নরেন্দ্রপুরের স্কুলের প্রধানশিক্ষক-সহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। এই নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। কিন্তু আদালতের দেওয়া সোমবারের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালিত না হওয়ায় দুপুর ২টোর মধ্যে বিচারপতি বসু পুলিশ সুপারের রিপোর্ট তলব করেন। তাঁকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতের শুনানিতে হাজির থাকারও নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী রিপোর্ট দেন বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার। সেই রিপোর্টেই তিনি দাবি করেছেন, স্কুলকাণ্ডে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম, শেখ আব্দুল সুফিয়ান এবং শোভন আলি সর্দার। তবে স্কুলের প্রধানশিক্ষক সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি বলে রিপোর্টে জানান পুলিশ সুপার। নরেন্দ্রপুর থানার আইসিও হাজির ছিলেন শুনানিতে।
নরেন্দ্রপুরকাণ্ডে প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সোমবার হাই কোর্টে উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্রপুর থানার আইসি। তাঁকেই বিচারপতি বসু নির্দেশ দিয়েছিলেন, প্রধানশিক্ষক-সহ যাঁদের নাম এফআইআরে রয়েছে, তাঁদের সোমবার রাতের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। দু’জনকে গ্রেফতারির কথা পুলিশ সুপার রিপোর্টে উল্লেখ করলেও তাতে নাম নেই প্রধানশিক্ষকের। কেন প্রধানশিক্ষক এখনও অধরা? মঙ্গলবারের শুনানিতে এই প্রশ্ন করেন বিচারপতি। পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার তদন্তে চারটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এক জন ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিকের পর্যবেক্ষণে তদন্ত চলছে। বিচারপতি বলেন, ‘‘মাধ্যমিক শুরু হওয়ার আগেই গ্রেফতার করুন।’’ এর পরেই নরেন্দ্রপুর থানার আইসি বলেন, ‘‘আমরা তল্লাশি চালিয়েছি। কিন্তু সবাই পালিয়ে গিয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, তাঁর অন্য থানায় বদলি হয়ে গিয়েছে। তাই তাঁর পক্ষে আর এই তদন্তে যুক্ত থাকা সম্ভব হচ্ছে না। তখন আদালত জানায়, আইসিকে পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করতে হবে যাতে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর বদলির নির্দেশ কার্যকরী না করা হয়। কারণ, এই মামলার তদন্ত শুরু থেকে যাঁর হাতে ছিল, তদন্ত প্রক্রিয়াও তিনিই শেষ করুন, এটাই আদালত চায়।