মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
এ বছর লোকসভা ভোট। তাই নরেন্দ্র মোদীর সরকার এ বার আর পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করতে পারবে না। মঙ্গলবার রায়গঞ্জের সভামঞ্চ থেকে বাজেট নিয়েই কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বার বার বাজেট প্রসঙ্গ টেনে খোঁচা দিলেন মোদী সরকারকে।
মমতা বলেন, ‘‘এ বার কিন্তু ওদের বাজেট হবে না। আমাদের হবে। ভোটের বছরে পূর্ণাঙ্গ বাজেট হয় না, ভোট অন অ্যাকাউন্টস হয়। তা-ও দেখবেন মিথ্যে কথা বলবেন। বলবেন আমি চাল দেব, টাকা দেব, আবার ১৫ লক্ষ টাকা করেও দেব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আরে ভোটের পর তো ওরা চলে যাবে। আমরা থেকে যাব, আমরা সব কিছু দেব। দেওয়াও চালু রয়েছে।’’
এখানেই না থেমে বাজেট নিয়ে আবারও কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। মমতা বলেন, ‘‘সামনে আমার বাজেট আছে। গিয়ে আমাকে বাজেট পেশ করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কিন্তু বাজেট নেই এ বার। আছে ভোট অন অ্যাকাউন্টস। শুধুমাত্র মাইনে দেওয়ার জন্য টাকা পাশ করা। কিন্তু ওরা অনেক কথা বলবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আবার বলছে এনআরসি করব, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি করব, আবার বলছে একতন্ত্র চলবে। গণতন্ত্র নয়, আপনারা কি এ সব চান?’’ আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কেন্দ্রীয় সরকারে বাজেট অধিবেশন বসছে। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। লোকসভা ভোট হয়ে গেলে নতুন সরকার গঠনের পর আবারও পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবে দেশের নির্বাচিত নতুন সরকার। সে ক্ষেত্রে মমতার ইঙ্গিত দিয়েছেন, অন্তর্বতী বাজেট পেশ করা কেন্দ্রের মোদী সরকার ক্ষমতায় ফিরবে না।
আবার আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্য বিধানসভায় বসবে বাজেট অধিবেশন। সেই বাজেট নিয়ে আবার নবান্নের সঙ্গে সংঘাত তৈরি হতে পারে রাজভবনের। কারণ রাজ্য সরকারের বাজেট অধিবেশন শুরু হয় রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে। প্রথম দিনেই রাজ্যপাল তাঁর ভাষণ দিতে বিধানসভায় আসেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিধানসভা সূত্রে খবর, অধিবেশনের প্রথম দিন শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করে অধিবেশন মুলতবি হয়ে যাবে। পরদিন থেকে পুরোদমে শুরু হবে বাজেট অধিবেশনের কাজকর্ম। কিন্তু সেখানে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভাষণের কোনও উল্লেখ নেই বলেই বিধানসভা সূত্রে খবর। রাজভবনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলছেন রাজ্যপাল বোস।
অন্য দিকে, সোমবার কোচবিহারের সভায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছিলেন মমতা। সেই প্রসঙ্গ টেনে রায়গঞ্জের মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় বিএসএফ বলছে আমার কার্ড নিতে হবে। কার্ড দিতে এলে বলবেন এটা তোমাদের এক্তিয়ার নয়, এটা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ার। বলবেন আমার ভোটার কার্ড আছে, আমার আধার কার্ড আছে, রেশন কার্ড আছে। তাই আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক।’’ মতুয়াদের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘মতুয়ারা নাগরিক না হলে ভোট দেন কী করে? এগুলো সব মিথ্যে কথা বলছে। তাঁরা সবাই এ দেশের নাগরিক। নাগরিক না হলে রেশন পান কী করে?’’