West Bengal Panchayat Election 2023

‘আমি থাকলে অশান্তি হত না’, বড়শুলে মনোনয়ন জমা নিয়ে সংঘর্ষে ক্ষমাপ্রার্থী তৃণমূল বিধায়ক

মঙ্গলবার বিডিও অফিসে মনোনয়ন পেশ শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটেছে বলে জানিয়েছেন বিধায়ক। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে বিরোধী প্রার্থীদের কাছে খোঁজখবর নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ১৭:৪৩
image of TMC MLA

বর্ধমানে বিডিও দফতরের সামনে উপস্থিত তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক (মাঝখানে)। — নিজস্ব চিত্র।

পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলে সোমবার পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে অশান্তির জন্য তিনি অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। ঘটনার এক দিন পর এমনটাই জানালেন বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক। মঙ্গলবার বর্ধমান-২ বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তিনি নিজেই উপস্থিত ছিলেন। নিশীথ জানান, সোমবার তিনি উপস্থিত থাকলে সংঘর্ষ হত না। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি দাবি করেছেন, সিপিএম কর্মীরা তাঁর দলের কর্মীদের বাইক ভাঙচুর করেছেন। অন্য দিকে, আসানসোলের রানিগঞ্জ ব্লকে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।

সোমবার বড়শুলে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় সিপিএম এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘাত হয়। যদিও মঙ্গলবার বিডিও অফিসে মনোনয়ন পেশ শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটেছে বলে জানিয়েছেন বিধায়ক। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে বিরোধী প্রার্থীদের কাছে খোঁজখবর নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। এর পরেই সোমবারের হিংসার ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন বিধায়ক নিশীথ। তাঁর কথায়, ‘‘সোমবার যা হয়েছে, তা হওয়া উচিত হয়নি। পুলিশ সক্রিয় হলে হয়তো এই ঝামেলা আটকানো যেত।’’ পাশাপাশি তিনি এ-ও জানান যে, সোমবার সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ তাঁদের দলের ৯ জন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তৃণমূল কর্মীদের ২৫টি বাইকে ভাঙচুর চালায় সিপিএম বলেও অভিযোগ করেন তিনি। নিশিথ বলেন, ‘‘আমি সোমবার নিজে উপস্থিত ছিলাম না। আমি থাকলে অশান্তি হতে দিতাম না।’’

Advertisement

সংঘাতের পর মঙ্গলবার বিডিও অফিসারের সামনে তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করতে দেখা গিয়েছে সিপিএম নেতা সাগর মল্লিককে। যদিও তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিধায়ক কেন বিডিও অফিসে উপস্থিত রয়েছেন, তা বুঝতে পারছেন না। তবে তাঁরা দমবেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সোমবার আমাদের যে ভাবে আটকানো হয়, মারধর করা হয়, তাতে আমাদের মনোবল কমেনি। বরং বেড়েছে।’’

সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বড়শুল মোড়ে সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে চরম বিবাদ বাধে। একে অন্যের দিকে ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, পুলিশ বাধা দিতে গেলে শক্তিগড় থানার ওসি দীপক সরকার-সহ বেশ কয়েক জন পুলিশ কর্মী ইটের আঘাতে জখম হন। শেষ পর্যন্ত সিপিএম প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা না করেই ফিরে যান। মঙ্গলবার বড়শুল মোড় থেকে বিডিও অফিস পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। বিডিও অফিসের ঢোকার মুখে চলেছে চেকিং। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় এক সঙ্গে দল বেঁধে মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি প্রার্থীরা।

অন্য দিকে, আসানসোলের রানিগঞ্জ ব্লকে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্রিমিত্রার নেতৃত্বে বিশাল মিছিল করে বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। বিডিও অফিসের বাইরে পুলিশ সেই মিছিলকে আটকে দেয়। তার জেরে অগ্নিমিত্রার সঙ্গে কিছু ক্ষণ বচসা চলে। পুলিশের বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন অগ্নিমিত্রা। এসিপি সৌরভ চৌধুরী যদিও গোলমালের অভিযোগ মানেননি। তিনি জানান, এই ধরনের কোনও অভিযোগ তার কাছে আসেনি। তাই তিনি বলতে পারবেন না। শান্তিপূর্ণ ভাবেই নিয়ম মেনে আসানসোলের রানিগঞ্জ বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা করা হচ্ছে।

রানিগঞ্জ ব্লকে ৯৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ১৬টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন রয়েছে। তার মধ্যে বেশির ভাগ আসনেই মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। মনোনয়ন কেন্দ্রের বাইরে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। প্রার্থী ছাড়া বাকি কর্মীদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অগ্নিমিত্রাকে ব্লক অফিসে প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও মনোনয়ন পেশের কক্ষে প্রবেশ করতে দেয়নি পুলিশ বলে অভিযোগ। এর পর ব্লক অফিসেই বসে পড়েন বিজেপি বিধায়ক। তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে ভাবে বোমা, গুলি চলছে, অশান্তি হচ্ছে, মানুষ মারা যাচ্ছে, তাতে শান্তিতে পুলিশ দিয়ে ভোট করানো যাবে না।’’ তিনি এ-ও দাবি করেন যে, পশ্চিমবঙ্গে নারীদের সম্মান দিতে জানে না রাজ্য সরকার, তাই নিগ্রহ করা হয়েছে তাঁকে।

আরও পড়ুন
Advertisement