বড়শুলে মারমুখী দুই পক্ষ। — নিজস্ব চিত্র।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে তৃণমূল এবং সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব বর্ধমানের বড়শুল। তার জেরে জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন। শুরু হয় ইটবৃষ্টিও। ইটের আঘাতে জখম হয়েছেন পুলিশকর্মীও। বীরভূমের নানুরে সিপিএম প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তা অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলেন সিপিএম কর্মীরা। অভিযোগ, বড়শুল মোড়ে তাঁদের গাড়ি আটকে দেয় তৃণমূল। তাঁদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, ইট ছুড়েছে সিপিএম কর্মীরাই। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। প্রাথনিক ভাবে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু আবার ইটবৃষ্টি শুরু হয় দু’দলের মধ্যে। সিপিএম কর্মীরা একটি গ্যারাজের বাইক ভাঙচুর করেন বলেও অভিযোগ। দফায় দফায় চলে আক্রমণ। ইটবৃষ্টিতে কয়েক জন জখম হন। জখম হন সিপিএম প্রার্থীও। ইটের আঘাতে শক্তিগড়ের ওসি দীপক সরকার-সহ চার জন পুলিশ কর্মী জখম হন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ চলার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আরও পুলিশ বাহিনী। ওই ঘটনায় কয়েক জন তৃণমূল কর্মী আটক করা হয়েছে। এর পর অবশ্য সিপিএম প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়নি সোমবার। ঘটনার প্রতিবাদে পালসিটে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন সিপিএম কর্মীরা। তার জেরে দেখা দেয় যানজট।
এ নিয়ে সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলার সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘‘তৃণমূল এবং পুলিশ মিলিত ভাবে আমাদের আটকানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরাও পণ করেছি মনোনয়নপত্র জমা দেব। আগামিকাল আরও সঙ্ঘব্ধ ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আসব।’’
সিপিএমের অভিযোগ নিয়ে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘সিপিএম আগে যেমন সন্ত্রাস করত তেমন আজও করেছে। ওরা ইটবৃষ্টি করেছে। পুলিশকে মেরেছে। ওরা আগের মতোই আছে। তৃণমূল পাল্টা দেব মনে করলে সিপিএমকে খুঁজে পাওয়া যেত না।’’
সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা অবশ্য বলেন, ‘‘কোথাও কোনও অশান্তির খবর আমার কাছে আসেনি। সর্বত্র কমিশনের নিয়ম মেনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া চলছে। কোথাও অশান্তি হলে প্রশাসন তার ব্যবস্থা নেবে।’’
বীরভূমের নানুরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় সিপিএম কর্মীর উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। সিপিএমের কীর্ণাহার এরিয়া কমিটির তরফে গাড়িতে চড়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলেন প্রার্থী এবং কর্মী-সমর্থকরা। অভিযোগ, তাঁদের রাস্তায় নামিয়ে মারধর করা হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে গাড়ির কাচও। সিপিএমের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের নানুর ব্লকের সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘আমার এই বিষয়টি জানা নেই। নানুরে মনোনয়ন জমা দিতে যাতে কারও অসুবিধা না হয় সে দিকে আমাদের নজর আছে। এ বার কে আম পাড়তে গিয়ে গাড়ি ভাঙল তার দায় আমাদের নয়।’’