দামোদর নদ থেকে উদ্ধার সূর্য মূর্তিটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজ়িয়ামে। —নিজস্ব চিত্র।
দামোদর নদের তীর থেকে উদ্ধার হল প্রাচীন সূর্য মূর্তি। রবিবার দুপুরে মূর্তিটি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজ়িয়ামে। মূর্তিটির ইতিহাস জানার চেষ্টায় রয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
পূর্ব বর্ধমানের হরিপুর এলাকায় দামোদর নদের তীরে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন জনা কয়েক যুবক। তাঁদের চোখে পড়ে ওই প্রাচীন মূর্তিটি। ওই যুবকদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজ়িয়ামের আধিকারিক শ্যামসুন্দর বেরা। তিনি মূর্তিটি খতিয়ে দেখে তার বিশেষত্ব সম্পর্কে খোঁজ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে। ঘটনাক্রমে পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে মূর্তিটি উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজ়িয়ামে নিয়ে গিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, উদ্ধার হওয়া মূর্তিটি পাল বা সেন যুগের।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজ়িয়ামের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক শ্যামসুন্দর বলেন, ‘‘মূর্তিটি পাওয়া গিয়েছে দক্ষিণ দামোদর এলাকার হরিপুর গ্রামে। ওটা নতুন পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে পড়ে। কয়েক জনের মাধ্যমে খবর পেয়ে মূর্তিটি দেখতে গিয়েছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সূর্য মূর্তিটি পাওয়া গিয়েছে দামোদর নদের গর্ভ থেকে। মনে করা হচ্ছে,পাল কিংবা সেন যুগে তৈরি এটি। দশম বা একাদশ শতকে তৈরি হলে কম করে এগারোশো বছরের পুরনো মূর্তি হবে এটা।’’ মূর্তিটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে শ্যামসুন্দর জানান, এটি ব্যাসল্ট পাথর দিয়ে তৈরি। মূর্তিটির উচ্চতা প্রায় তিন ফুট, প্রস্থ দেড় ফুটের কাছাকাছি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজ়িয়ামে বেশ কয়েকটি সূর্য মূর্তি রয়েছে। তবে এই মূর্তিতি ‘ব্যতিক্রমী’ বলে মনে করছেন শ্যামসুন্দর। তিনি বলেন, ‘‘মূর্তিটাকে ব্যতিক্রমী বলে মনে হওয়ার কারণ, কীর্তিমুখ এবং উড়ন্ত বিদ্যাধরের উপস্থিতি। মূর্তিটির মুখমণ্ডল ভাঙা। তবে একচক্র এবং সপ্তাশ্ববাহী রথ রয়েছে। সেখান থেকে অনুমান করছি, মূর্তিটি পাল বা সেন যুগের স্থাপত্যকীর্তি হতে পারে।’’ তিনি জানান, বালি থেকে তোলার সময় মূর্তিটির মুখমণ্ডলের কিছুটা ভেঙে গিয়েছে। উদ্ধারকাজে সহায়তা করার জন্য রায়না থানার পুলিশ এবং স্থানীয় গ্রামবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।