এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
সহপাঠীরা সকলে নতুন ক্লাসে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাকে ভর্তি করানোর মতো টাকা নেই বাবার কাছে। তা হলে কি পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে? আশঙ্কা আর অভিমানে ঘরের মধ্যে আত্মঘাতী হল নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানা এলাকায়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃতার নাম নাসিমা মোল্লা। বছর চোদ্দোর মেয়েটি সারেঙ্গাবাদ ইটখোলা হাই স্কুলে পড়াশোনা করত। শনিবার নবম থেকে দশম শ্রেণিতে ভর্তিপ্রক্রিয়া চলছিল ওই স্কুলে। নাসিমার সহপাঠীরা শনিবারই দশম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নাসিমার কাছে টাকা ছিল না। টাকার জন্য বাবাকে বলেছিল সে। রিকশাচালক ইসমাইল মোল্লার কাছে তখন টাকা ছিল না। মেয়েকে একটা দিন অপেক্ষা করতে বলেন তিনি। তাতেই মনখারাপ হয়ে যায় নাসিমার। তার পর ওই ঘটনা।
শনিবার দুপুরে বাড়ির লোকজন যে যাঁর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তার মধ্যেই ঘরে ঢুকে কখন নাবালিকা বিষপান করেছে, কেউ জানতে পারেননি। পরে ঘরে ঢুকে মেয়েকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের লোকজন। নাসিমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতেই মৃত্যু হয় তার।
এমন একটি ঘটনায় শোকস্তব্ধ এলাকা। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, পড়াশোনায় ভাল ছিল নাসিমা। মিষ্টি ব্যবহারের জন্য প্রতিবেশীরা বেশ পছন্দ করত মেয়েটিকে। সে এমন একটি কাণ্ড ঘটাবে, কেউ ভাবতে পারেননি। নাসিমার দাদা আক্রম মোল্লা বলেন, ‘‘বোন ক্লাস নাইন থেকে টেনে ভর্তির জন্য টাকা চেয়েছিল বাবার কাছে। আমাদের অভাবের সংসার। বাবা বলেছিল, এখন টাকা নেই। এক দিন অপেক্ষা করতে। কিন্তু বোন অভিমানে বিষ খেয়ে নিয়েছে।’’ জানা যাচ্ছে, নবম থেকে দশম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য মোটামুটি ৫৫০ টাকা লাগে। স্কুল কর্তৃপক্ষ চাইলে ওই ফি মুকুবও করতে পারেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এ নিয়ে ক্যানিংয়ের এসডিপিও রামকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। বাকিটা পরে জানাব।’’