(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নানাবিধ কারণে নতুন নথিভুক্তদের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে ভাতা দেওয়ার বিষয়টি আটকে ছিল। এ হেন পরিস্থিতিতে নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে নিজের উদ্যোগে ৭৬ হাজার মানুষকে বার্ধক্যভাতা দেওয়া শুরু করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অতঃপর অভিষেকের ‘ভার’ বোধ হয় কিছুটা লাঘব হবে। বুধবার পূর্ব বর্ধমানের সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে বিপুল সংখ্যক মানুষকে নতুন করে সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার বর্ধমানে মমতা ঘোষণা করেন, ‘‘যাঁরা দুয়ারে সরকার এবং সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পে আবেদন করেছিলেন, তাঁদেরটা আমরা অনেকটাই ক্লিয়ার করে দিয়েছি।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে ১৩ লক্ষ, ‘বার্ধক্যভাতা’য় ন’লক্ষ, ‘বিধবাভাতা’য় এক লক্ষ চার হাজার, ১০ লক্ষ ‘কন্যাশ্রী’ এবং ৮৫ হাজার রাজ্যবাসী ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পে ভাতা পাবেন। ফেব্রুয়ারির ১ তারিখেই সেই টাকা সংশ্লিষ্টদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
প্রশাসনিক আধিকারিকদের বক্তব্য, যে ন’লক্ষ মানুষ বার্ধক্যভাতা পাবেন, তাঁদের মধ্যে ডায়মন্ড হারবারের বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও রয়েছেন। গত ৭ জানুয়ারি ডায়মন্ড হারবারে ওই কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন অভিষেক। তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ যাকে ফের এক বার ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’ বলে তুলে ধরেছিলেন। অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘ভারতের কোনও সাংসদ এই কাজ করেননি।’’ সেই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য’। বস্তুত, অভিষেক আগেই বলেছিলেন, নবান্ন চেষ্টা করছে। তবে নানা কারণে তা করা যাচ্ছে না। এমনকি, গত ৭ জানুয়ারিও রাজ্য সরকারের চেষ্টার কথা প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
ইতিমধ্যেই মমতার প্রণীত ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে উপভোক্তার সংখ্যা দু’কোটি পেরিয়ে গিয়েছে। তাতে যুক্ত হতে চলেছেন আরও ১৩ লক্ষ। লোকসভা ভোটের আগে যে সংখ্যা মহিলা ভোটারদের ক্ষেত্রে ‘উল্লেখযোগ্য’ বলে মত রাজনৈতিক মহলের। বুধবারের সভা থেকেও মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। পাশাপাশি এ-ও বলেছেন, কেন্দ্র টাকা না দিলেও রাজ্য সরকার সামাজিক প্রকল্পগুলি চালিয়ে নিয়ে যাবে। মমতার কথায়, ‘‘এত সামাজিক প্রকল্প পৃথিবীর কোনও সরকার দেয় না। আমাদের মতো সামাজিক উন্নয়ন কেউ করতে পারেনি।’’