বর্ধমান থেকে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা সেরে ফেরার পথে গাড়ি আচমকা ব্রেক কষায় কপালে সামান্য আঘাত পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বর্ধমানের গোদার মাঠে প্রশাসনিক সভা ছিল মমতার। সভা শেষে কলকাতা ফেরার জন্য গাড়িতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। সভাস্থল থেকে চড়াই পথে জিটি রোডে ওঠার মুখে আচমকাই ব্রেক কষেন গাড়িচালক। সেই ঝাঁকুনিতেই কপালে আঘাত পান মুখ্যমন্ত্রী। যদিও গাড়ি না-থামিয়ে মমতা সরাসরি কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, আঘাত পাওয়ার পরেই কপালে রুমাল বেঁধে নেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সভা শুরু করেন মমতা। বর্ধমান গিয়েছিলেন হেলিকপ্টারে। কিন্তু সভা শেষ হওয়ার আগেই আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। কুয়াশার পাশাপাশি শুরু হয় বৃষ্টি। তত ক্ষণে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী আর হেলিকপ্টারে ফিরবেন না। সড়কপথেই কলকাতায় পৌঁছবেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সভার মাঠ থেকে বড় রাস্তায় ওঠার সময় মুখ্যমন্ত্রী যে গাড়িতে বসেছিলেন তার চালক আচমকাই ব্রেক কষেন। সেই ঝাঁকুনিতে মমতা কপালে সামান্য আঘাত পেয়েছেন।
বুধবার সকালেই হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাড থেকে মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে চেপে যান বর্ধমানে। কথা ছিল, সভা শেষ করে আবার হেলিকপ্টারেই ডুমুরজলায় নেমে কলকাতা ফিরে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারের বদলে সড়কপথে কলকাতা ফেরার সিদ্ধান্ত হয়। সভাস্থল থেকে হেঁটে মুখ্যমন্ত্রী গিয়ে ওঠেন তাঁর গাড়িতে। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে চালকের পাশের আসনে উঠে বসেন। গাড়ি এগোতে থাকে জিটি রোডের দিকে। সভাস্থল থেকে জিটি রোডে ওঠার মুখটি বেশ চড়াই। সে জন্য চালককে গাড়ির গতিবেগ বৃদ্ধি করতে হয়। আবার জিটি রোডে উঠে কমাতে হয় গতি। সেই সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। ছিল কুয়াশাও। গতির হেরফেরের জেরেই গাড়িতে ঝাঁকুনি হয়। তাতে মুখ্যমন্ত্রী কপালে সামান্য আঘাত পান। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর আঘাত পাওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও পর্যন্ত সরকারের কেউ স্বীকার করেননি।
গত বছরের ২৭ জুন জলপাইগুড়ির ক্রান্তির সভাস্থল থেকে হেলিকপ্টারে বাগডোগরা পৌঁছনোর কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু, মাঝপথে দুর্যোগের মুখে পড়ে মুম্বইয়ের একটি সংস্থা থেকে ভাড়া নেওয়া সেই হেলিকপ্টার। দৃশ্যমানতা প্রায় তলানিতে চলে যায়। ঝড়বৃষ্টিতে বিপজ্জনক ভাবে দুলতে থাকে হেলিকপ্টারটি। বেগতিক দেখে হেলিকপ্টারের দুই পাইলট শালুগাড়ায় সেনাবাহিনীর হেলিপ্যাডে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে জরুরি অবতরণ করেন। অভিযোগ, খারাপ আবহাওয়ার জন্য দুলুনিতে এবং শালুগাড়ায় সিঁড়ি না থাকায় হেলিকপ্টার থেকে নামতে গিয়ে কোমরে ও হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই চোট নিয়ে দুর্ভোগ কিছু দিন আগে পর্যন্তও কাটেনি মুখ্যমন্ত্রীর। বারে বারেই চিকিৎসা করাতে যেতে হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। ওই চোটের কারণে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর কাঁধে অস্ত্রোপচার করাতে হয়।