(বাঁ দিকে) বাঘ ধরতে প্রস্তুতি বন দফতরের, নদীর ধারে মিলেছে বাঘের পায়ের ছাপ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
সোমবার সকালে কুলতলির মৈপীঠের কিশোরীমোহনপুরে দেখা গিয়েছিল তাকে। মঙ্গলবার কিছুটা অবস্থান বদলে উত্তর-পূর্বে সরে এসেছে সুন্দরবনের সেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ বাঘ। উত্তর জগদ্দল লাগোয়া নদীর ধারে পায়ের ছাপ দেখে তার উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নতুন করে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা জাল দিয়ে ঘেরার কাজ চলছে। বাঘ ধরতে শুরু হয়েছে খাঁচা বসানোর তোড়জোড়ও।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) নিশা গোস্বামী এবং দুই সহকারী বনাধিকারিক (এডিএফও) অনুরাগ চৌধুরী এবং পার্থ মুখোপাধ্যায় রয়েছেন ঘটনাস্থলে। নিশা বলেন, ‘‘আমাদের অফিসার এবং কর্মীরা গ্রাম লাগোয়া এলাকায় ঢুকে পড়া বাঘকে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা করছে।’’ বন দফতর সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে বাঘকে তাড়িয়ে ওরিয়ান নালার ওপারে আজমলমারির জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে বৈকুন্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীকান্ত পল্লি ও কিশোরীমোহনপুর এলাকায় জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে অনুসন্ধান শুরু করেছিলেন গ্রামবাসীরা। পরে বনকর্মীরাও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। পায়ের ছাপ অনুসরণ করে নদীবাঁধ সংলগ্ন বনসৃজন প্রকল্পের বাদাবনে ঢুকতেই শোনা যায় গর্জন। গ্রামবাসীদের একাংশ জানাচ্ছেন, মৃত একটি গবাদি পশুকে নদীর পারে ফেলা হয়েছিল। সম্ভবত সেই ‘টানেই’ বাঘ খাঁড়ি টপকে গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় এসেছে।
অন্য দিকে লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় বাঘ চলে আসায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। জঙ্গলের পাশেই তাদের বসবাস। রুজি-রুটির জন্য তাঁদের জঙ্গলেও যেতে হয়। সেই ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রশাসন। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জঙ্গল সংলগ্ন গোটা লোকালয় জাল দিয়ে ঘিরে ফেলার দাবি জানাচ্ছেন। এ ছাড়া নদীবাঁধ সংলগ্ন রাস্তায় যাতে আলো লাগানো হয়, তারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে রয়েছে মৈপীঠ উপকূল থানার পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে। বাঘ যাতে গ্রামের ভিতরে ঢুকে পড়তে না পারে, নিশ্চিত করতে সোমবার সারা রাত মশাল এবং টায়ার জ্বালিয়ে এলাকায় নজরদারি চালান স্থানীয় বাসিন্দা ও বনকর্মীরা।