গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আফগানিস্তানের মাটিতে পাক বিমানহামলার নিন্দা করল ভারত। সোমবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে প্রতিবেশীকে দোষারোপ করা ইসলামাবাদের পুরনো অভ্যাস। এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে।’’
গত ২৫ ডিসেম্বর ভোরে পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশ লাগোয়া আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালায় পাক বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান। ইসলামাবাদের দাবি, আফগান তালিবানের একাংশের মদতপুষ্ট তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছে। যদিও আফগানিস্তানের শাসক তালিবানের অভিযোগ, বারমাল জেলায় লামান-সহ সাতটি গ্রাম লক্ষ্য করে একের পর এক বিমান হামলা চালানো হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে মহিলা, শিশু-সহ ৪৬ জন সাধারণ মানুষের।
হামলার পরেই পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আফগানিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তালিবান। আফগান সরকারের সহকারী মুখপাত্র মহম্মদ খুরাসনির দাবি, যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁরা সকলেই খাইবার-পাখতুনখোয়া থেকে চলে আসা পাশতুন শরণার্থী। পাক বিমানহানার ‘জবাব’ দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। ‘পাক বিমানহানায় মহিলা ও শিশুদের মৃত্যু নিন্দাজনক’ বলে কার্যত তালিবানের অভিযোগকেই স্বীকৃতি দিয়েছে নয়াদিল্লি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত বরাবর একটি পাহাড়ি এলাকায় বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। একটি ভিডিয়োয় বিধ্বংসী বিমান হামলার ইনফ্রারেড ফুটেজ ধরা পড়েছে। সেই ভিডিয়ো (যার সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি) ভাইরাল হয়েছে। মার্চের পর থেকে আফগানিস্তানে টিটিপি আস্তানায় এই নিয়ে দ্বিতীয় হামলা চালাল পাক সেনা।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল টিটিপি। বিদ্রোহী ওই পাশতুন গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল, সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পাক সেনা এবং ‘কাউন্টার টেররিজ়ম ডিপার্টমেন্ট’ (সিটিডি)-এর যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করার ফলেই অশান্তি ছড়িয়েছে খাইবার-পাখতুনখোয়ায়। আমেরিকায় ড্রোন হামলায় নিহত জঙ্গিনেতা বায়তুল্লা মেহসুদ প্রতিষ্ঠিত এই গোষ্ঠী বরাবরই পাক সরকারের বিরোধী। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে খুন করেছিল টিটিপি যোদ্ধারা। তার পর একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা। গত দেড় দশকে একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা। ২০০৯ সালে টিটিপি-র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজত’ চালিয়েছিল পাক সেনা। পাকিস্তানের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সেটিই সবচেয়ে বড় ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’।