বরাহনগরের সভায় তাপস রায়। নিজস্ব চিত্র।
বাংলায় এই মুহূর্তে নেতা দু’-তিন-চার জন নয়। নেতা বাংলায় এক জনই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরাহনগরে একটি কর্মসূচিতে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘নেতা হওয়া অত সহজ নয়।’’
বেশ কিছুদিন ধরে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছ’মাসের মধ্যে ‘নতুন তৃণমূলের’ ব্যানার-ফ্লেক্স পড়েছে। দলকে স্বচ্ছ ভাবমূর্তিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার বার্তা দেওয়া ওই প্রচারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ে ছবি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার বরাহনগরে তৃণমূল বিধায়কের ওই মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে জল্পনা। সোমবার তাপাস তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমি বরাবরই দলে নতুন প্রজন্মকে স্বাগত জানিয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা। তাই তিনি আমাদের নেত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সেনাপতি।’’
বরানগর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে রবিবার স্থানীয় বিধায়ক তাপস বলেছিলেন, ‘‘আপামর জনসাধারণ আর কাউকে কিন্তু নেতাজি বলেনি। ভারতবর্ষে আর কাউকে কিন্তু নেতা বা নেতাজি বলা হয় না। যদিও সেই সময় ‘গ্যালাক্সি অব লিডারশিপ’, মানে ভারতমাতার এত সন্তান, ‘এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায় দেখ’। কিন্তু নেতাজি বলা হত শুধু সুভাষচন্দ্র বসুকে। মাথায় এটা রাখতে হবে। আমরা অনেককেই নেতা বলি। এ নেতা, ও নেতা সে নেতা। নেতা অত সহজে হয়? বলুন পদাধিকারী, বলুন কর্মী, বলুন রাজনৈতিক ব্যক্তি, রাজনীতিক। নেতা বাংলায় এক জন। দুই-তিন-চার জন নয়। সেটা আপনারা জানেন, আমরাও জানি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতা হওয়া অত সহজ নয়। বললেই হয় না।’’
জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেকেই নেতৃত্ব দেন বলে ওই কর্মসূচিতে তাপসের মন্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক নেতা আগামিদিনে নির্বাচনকে লক্ষ্য করেন। এটাই তাঁর লক্ষ্য। নেতা বা নেত্রী যিনি ২০২৩ সালটা দেখেন। যিনি আগামী প্রজন্ম, সমাজের কথা ভাবেন দূরদৃষ্টি দিয়ে। তাই সকলকে নেতা ভাববেন না, সকলকে নেতা বলবেনও না। নেতা বড় কঠিন শব্দ। এর বিশ্লেষণে গেলে অনেক বড় ব্যাপার। আমি সেই ভাবসম্প্রসারণে যাচ্ছি না। আমরা অতি ক্ষুদ্র মানুষ।’’
জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেকেই নেতৃত্ব দেন বলে ওই কর্মসূচিতে তাপসের মন্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক নেতা আগামিদিনে নির্বাচনকে লক্ষ্য করেন। এটাই তাঁর লক্ষ্য। নেতা বা নেত্রী যিনি ২০২৩ সালটা দেখেন। যিনি আগামী প্রজন্ম, সমাজের কথা ভাবেন দূরদৃষ্টি দিয়ে। তাই সকলকে নেতা ভাববেন না, সকলকে নেতা বলবেনও না। নেতা বড় কঠিন শব্দ। এর বিশ্লেষণে গেলে অনেক বড় ব্যাপার। আমি সেই ভাবসম্প্রসারণে যাচ্ছি না। আমরা অতি ক্ষুদ্র মানুষ।’’
প্রসঙ্গত, এর আগে গত রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভাইরাও হওয়া একটি ভিডিয়োতে তাপসকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘আমাকে ধরে রাখা খুব কঠিন। সময় এলেই দলকে জানিয়ে দেব, যে আর রাজনীতি করতে চাই না।’’ তাঁর মন্তব্য ঘিরে বিতর্কে দানা বাঁধার পর বরাহনগরের বিধায়ক বলেছিলেন, ‘‘আমি যেটা বিশ্বাস করি সেটাই বলেছি। সবক্ষেত্রে বয়সের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে বলে আমার মনে হয়, এবং আমি তা পালন করব।’’ সেই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘শরীর যদি সায় না দেয়, মস্তিষ্ক যদি সচল না থাকে। তাহলে পরে জনপ্রতিনিধিত্বের কাজ বা সংগঠনের কাজ করতে পারব কি?’’