জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং কাশী বিশ্বনাথ মন্দির। ফাইল।
জ্ঞানবাপী মসজিদে পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে দায়ের আবদনের শুনানিতে সম্মতি দিল বারাণসী জেলা আদালত। এ বিষয়ে ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’র আবেদন সোমবার খারিজ করে দিয়েছেন জেলা বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেস। হিন্দু পক্ষের আবেদন মেনে শুনানি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’র আইনজীবী অভয় নাথ বারাণসী জেলা আদালতে জানিয়েছিলেন, ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন অনুযায়ী এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হতে পারে না। তিনি জানান, ব্রিটিশ জমানাতেও জ্ঞানবাপীর জমিতে মন্দির গড়ার দাবি উঠেছিল। ১৯৩৬ সালে বারাণসীর আদালতে সেই আবেদন জানানো হলেও জ্ঞানবাপীতে নমাজের অধিকার বজায় থাকে ১৯৩৭ সালের রায়ে। ১৯৪২-এ ইলাহাবাদ হাই কোর্টও সেই রায় বহাল রেখেছিল।পাশাপাশি মসজিদ কমিটির যুক্তি, এখন আদালতে দাবি উঠেছে, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের জমি কোনও দিনই ওয়াকফ সম্পত্তি ছিল না। কিন্তু বছর খানেক আগে কাশী বিশ্বনাথ ধাম করিডর তৈরির জন্য মন্দির ট্রাস্ট মসজিদের সামনের জমি পেতে উত্তরপ্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গেই চুক্তি করেছিল।
অন্য দিকে হিন্দুত্ব পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু জৈন এবং হরিশঙ্কর জৈনের দাবি, ১৯৯১ সালের ওই আইন জ্ঞানবাপীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাঁর দাবি, ১৯৪৭ সালের পরেও শৃঙ্গার গৌরীস্থলে পূজার্চনার প্রমাণ রয়েছে। সেই দাবির প্রমাণ হিসেবে ১২ জন সাক্ষীকেও পেশ করা হয়েছিল আদালতে। পাশাপাশি, মন্দির ধ্বংস করার জন্য মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেবের ‘ফরমান’ এবং বারাণসী নিম্ন আদালতের নির্দেশের মসজিদ চত্বরে ভিডিয়োগ্রাফির সময় ওজুখানার শিবলিঙ্গের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে বলেও দাবি করেছিলেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা-সহ) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়েছিলেন বারাণসী দায়রা আদালতে। এর পর দায়রা আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর নিযুক্ত কমিটি মসজিদের অন্দরে সমীক্ষা ও ভিডিয়োগ্রাফির নির্দেশ দিয়ে পর্যবেক্ষক দল গঠন করে। সেই কাজ শেষ হওয়ার পরেই গত ২০ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলার শুনানির দায়িত্ব পায় বারাণসী জেলা আদালত। সেই শুনানির ধারা বহাল রাখারই সিদ্ধান্ত নিলেন বিচারক বিশ্বেস।