বিস্ফোরণের অভিঘাতে মোচপোল গ্রামে ভেঙে পড়েছে বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
দত্তপুকুরে অবৈধ ‘বাজি’ কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রথম কাউকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে নীলগঞ্জ এলাকা থেকে কেরামত আলির ‘সহযোগী’ শফিক আলি ওরফে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে, এ-ও জানা গিয়েছে যে, কেরামতের ‘বাজি’র ব্যবসায় ‘অংশীদারিত্ব’ ছিল শফিকের। সূত্রের খবর, বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হয়ে মৃত্যু হয়েছে কেরামতের।
রবিবার সকালে বিস্ফোরণের অভিঘাতে কেঁপে উঠেছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দত্তপুকুর এলাকার মোচপোল গ্রাম। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত কমপক্ষে দশ জন। দুর্ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে স্থানীয়রা রবিবার থেকেই বলতে শুরু করেন যে, ‘‘এ সবই কেরামতের কাণ্ড।’’ যে কাণ্ডে রবিবার সকালে কেঁপে ওঠে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরের বারাসত শহরও। যে বিস্ফোরণের তীব্রতায় কারও দেহাংশ উড়ে গিয়ে পড়েছে পাশের বাড়ির ছাদে। যে বিস্ফোরণের অভিঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়েছে সাতটি শরীর।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয়দের বাধা, বারণ ধর্তব্যে আনতেন না কেরামত। নিজের মতো করে কারখানা খুলে ‘বাজি’ বানাতে শুরু করেছিলেন। রবিবার সকালে তাঁর অবৈধ ‘বাজি’ কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। স্থানীয় সামসুল হকের জমি ভাড়া নিয়েই নাকি এই বাজির ব্যবসা ফেঁদেছিলেন কেরামত। সামসুলের বাড়ি লাগোয়া জমিতে দিনের বেলায় চলত ‘বাজি’ তৈরি। আর দু’টি ঘরে চলত ‘বাজি’ প্যাকেজিংয়ের কাজ। সামসুল এই কারখানাতেই কাজ করতেন। বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছে তাঁরও।
দত্তপুকুরের এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতরও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই কেরামতকে ‘তৃণমূলের লোক’ বলে দাবি করছে আইএসএফ। শাসকদলের অবশ্য দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনই সম্পর্ক নেই। তারা এই গোটা কাণ্ডের দায় চাপিয়েছে আইএসএফের উপর। আরও স্পষ্ট করে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন রায় আইএসএফ নেতা রমজান আলির নাম নিয়েছেন। এ ছাড়া উঠে আসছে আজিবর রহমান নামে এক জনের নাম। বস্তুত, তাঁর বাড়ির গুদাম থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি। এলাকাবাসীর দাবি, তিনি তৃণমূল নেতা। ঘটনার পর থেকে অবশ্য খোঁজ মেলেনি আজিবরের।