গানে দর্শকদের মাতালেন পুলিশ অফিসার এবং কর্মীরা।
বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল এলাকায়। কিন্তু মঙ্গলবার সেই সান্ধ্য অনুষ্ঠানে শুরু হয় দুই গোষ্ঠীর ঝামেলা। গানের জলসা দেখতে এসে মারামারি দেখে বাড়ি ফিরতে হচ্ছিল দর্শকদের। এমন সময়ে এল পুলিশ। আধিকারিকেরা পরিস্থিতি তো নিয়ন্ত্রণে আনলেনই, উল্টে খুশি করলেন দর্শকদের। সবাইকে আনন্দ দিতে গায়ক হলেন থানার সাব ইনস্পেক্টর, কনস্টেবল এবং পুলিশকর্মীরা। জলসা ভরালেন কুমার শানু, উদিত নারায়ণদের গাওয়া হিন্দি গান গেয়ে। পুলিশের গলায় ‘অব তেরে বিন জি লেঙ্গে হাম’, ‘ফুলোসা চেহেরা তেরা’ শুনে নেচে উঠলেন সবাই। পুলিশের গানের পর অনুষ্ঠান মঞ্চে ফিরে এলেন ঝামেলার চোটে সাজঘরে চলে যাওয়া শিল্পীরা। মঙ্গলবার রাতে ডায়মন্ড হারবারের কুলেশ্বর গ্রামের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার গভীর রাতে লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে কুলেশ্বর গ্রামের ঘোষপাড়ায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময় আচমকা দুই গোষ্ঠীর বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। বন্ধ হয়ে যায় অনুষ্ঠান। শিল্পীরাও নিজেদের জিনিসপত্র গুটিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেওয়ার কথা ভাবছিলেন। ঠিক ওই সময়ে ঝামেলার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন দে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ডায়মন্ড হারবার থানার আইসি অনুদ্রুতি মজুমদার। প্রথমে গন্ডগোল থামাতে গিয়ে দু’পক্ষের মোট চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে বন্ধ হয়ে যাওয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নতুন করে চালু করতে গায়ক এবং যন্ত্রশিল্পীদের ফিরিয়ে আনে পুলিশ। শুধু তাই নয়, গ্রামবাসীদের খুশি রাখতে একে একে ডায়মন্ড হারবার থানার সাব ইন্সপেক্টর রবীন্দ্রনাথ রায়, কনস্টেবল অমিত হালদার-সহ বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী মঞ্চে উঠে গান গাইতে শুরু করেন।
যে পুলিশের হাতে লাঠি-বন্দুক, তারা গন্ডগোল থামাতে এসে নিজেরা মঞ্চে উঠে গান গাইবেন, এটা ছিল কল্পনাতীত। অনুষ্ঠানে আসা বলাই মণ্ডল নামে এক যুবকের কথায়, ‘‘গন্ডগোলের জেরে অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফিরছিলাম। কিন্তু পুলিশ আধিকারিকরা নিজেরাই অনুষ্ঠান শুরু করেন। তাঁদের গলায় গান শুনব, এটা আমরা কখনও ভাবিনি। পুলিশের এই উদ্যোগে আমরা খুব খুশি।’’
অন্য দিকে, ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুনকুমার দে বলেন, ‘‘উৎসবের মরসুম চলছে বাংলায়। আমরা চাইনি সাময়িক গন্ডগোলের কারণে অনুষ্ঠানটাই বন্ধ হয়ে যাক। তাই পুলিশকর্মীরাই গান গেয়ে অনুষ্ঠান চালু করেন।’’