—ফাইল চিত্র।
হলুদে যে ব্যাকটেরিয়ারোধক, প্রদাহ-রোধী উপাদান রয়েছে তা আয়ুর্বেদে বলা আছে। হলুদে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের উপকারিতার কথা স্বীকার করেন পুষ্টিবিদেরাও। কিন্তু হলুদ কি চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী? ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, হলুদ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, মাথার ত্বক থেকে নির্গত সেবাম নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে।
হলুদ কীভাবে সাহায্য করে?
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, যে হেতু হলুদে ব্যাকটেরিয়ারোধক উপাদান রয়েছে এবং রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে, তাই তার প্রভাব পড়ে মাথার ত্বকেও। তা ছাড়া হলুদে আছে কারকিউমিন, যাতে রোগ নিরাময়ে কার্যকর এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ফলে নিয়মিত হলুদ খেলে—
১। মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির ফলে চুলের ফলিকল যথাযথ পুষ্টি এবং প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পাবে, যা চুলের বৃদ্ধির জন্য উপযোগী।
২। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চুল ঝরার একটা বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায় খুশকি বা মাথার ত্বকে ছত্রাকজনিক সংক্রমণ। হলুদে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক প্রতিরোধক উপাদান মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। ফলে চুল সহজেই বাড়ে।
৩। মাথার ত্বক প্রাকৃতিক নিয়মেই তৈলাক্ত হয়। কারণ মাথার ত্বক থেকে নির্গত হয় সেবাম। অতিরিক্ত সেবাম ক্ষরণ হলে তা মাথার ত্বকের রন্ধ্রের মুখ বন্ধ করে চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। অনেক সময় তা থেকে চুল পড়ার সমস্যাও দেখা যায়। হলুদ ওই সেবাম নিঃসরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অতিরিক্তি সেবাম নিঃসরণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ায় চুল ঝরাও বন্ধ হয়।
৪। চুলের স্বাস্থ্যকর ঔজ্জ্বল্য আসে। চুলের ডগা ফেটে যাওয়া আর্দ্রতা নষ্ট হওয়ার মতো সমস্যা থাকে না।
৫। হলুদের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট চুলকে ফ্রি র্যাডিকালসের হাত থেকেও মুক্ত রাখে। যে ফ্রি র্যাডিকালসের জন্য চুলে অকালপক্বতা, শুষ্ক ভাব, চুল কমে যাওয়া বা টাক পড়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
খালি পেটে হলুদ জল উপকারী
কাঁচা হলুদ খাওয়াই যায়। তবে অনেকেরই তার স্বাদ কড়া লাগতে পারে বা পছন্দ না-ও হতে পারে। তাঁরা রোজ সকালে খালি পেটে হলুদ-জলও খেতে পারেন। তাতেও চুলের উপকার হবে।
কী ভাবে বানাবেন হলুদ-জল
উপকরণ:
১ চা চামচ হলুদগুঁড়ো
১ চিমটে গোলমরিচগুঁড়ো (হলুদে থাকা কারকিউমিন যাতে শরীরে আরও ভাল ভাবে প্রবেশ করে, তা নিশ্চিত করে গোলমরিচ)
১ টেবিল চামচ মধু (মধুতেও আছে ব্যাকটেরিয়ারোধক উপাদান)
১ টেবিল চামচ লেবুর রস (ভিটামিন সি সাহায্য করে মাথার ত্বকের পিএইচের ভারসম্য বজায় রাখতে )
গরম জল
প্রণালী:
উষ্ণ জলে হলুদ গুলে নিয়ে তাতে একে একে গোলমরিচগুঁড়ো, মধু এবং শেষে লেবুর রস দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। ঈষদোষ্ণ ভাব থাকাকালীনই খান।
কখন খাবেন?
হলুদ-জল সকালে খালিপেটে খাওয়াই সবচেয়ে ভাল। তবে চাইলে সন্ধ্যাবেলাতেও খাওয়া যায়। নিয়মিত হলুদ-জল খাওয়া যেতে পারে।
সতর্কতা
প্রথমেই এক গ্লাস হলুদ-জল না খেয়ে অল্প পরিমাণে খেতে শুরু করুন। ধীরে ধীরে পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারেন। কারণ হলুদে থাকা কারকিউমিন অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে গেলে তা হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই অল্প দিয়েই শুরু করুন।