ভগবানপুরের গুড্ডুকে খুঁজছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রথম বার বন্দুক হাতে পেয়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে পথবাতি পর্যন্ত নিভিয়ে দিয়েছিলেন ওয়েব সিরিজ ‘মির্জাপুর’-এর গুড্ডু পণ্ডিত। দাদার রকম দেখে ভয় পেয়েছিলেন ভাই বাবলু। কিন্তু বন্দুক হাতে গুড্ডু বলেন, ‘‘আমার তো খুব মজা লাগছে।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরেও প্রায় একই কাণ্ড। এখানে শেখ গুড্ডুর ভয়ে বন্ধ হয়ে গেল দোকানপাট। শুনশান হয়ে গেল রাস্তা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর থানার লালপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন দুই বন্ধু, শেখ গুড্ডু এবং শেখ ইজাজ। হঠাৎ তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। ঝগড়া শুনে আশপাশের লোকজন আন্দাজ করেন অশান্তির কারণ টাকা। ঝগড়া চলাকালীন হঠাৎ এক বন্ধু বন্দুক বার করে এলোপাথাড়ি গুলি চালান বলে অভিযোগ। মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। আতঙ্কে বন্ধ হয়ে যায় গোটা বাজার। বেশ কিছু ক্ষণ যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ভগবানপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৪ রাউন্ড গুলি চালিয়েছেন শেখ গুড্ডু। পলাতক গুড্ডুর খোঁজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, শেখ ইজাজের কাছ থেকে শেখ গুড্ডু ২ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা কিছুতেই শোধ করছিলেন না। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ দুই বন্ধুর দেখা হয় লালপুর বাজারের একটি চায়ের দোকানে। সেখানে ইজাজ টাকা চাইলে মেজাজ হারান গুড্ডু। আচমকা কোমরের পিছনে লুকিয়ে রাখা বন্দুক বের করে ইজাজের দিকে তাক করেন তিনি। একটি গুলিও অবশ্য ইজাজের গায়ে লাগেনি। কোনও ক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালান তিনি। তত ক্ষণে বন্দুক হাতে এগরা-বাজকুল রাস্তার উপর আস্ফালন করছেন গুড্ডু। তাঁকে দেখে ভয়ে সিঁটিয়ে যান পথচলতি মানুষরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ভগবানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক নাড়ুগোপাল বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী। যদিও তত ক্ষণে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন গুড্ডু।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় রাস্তায় পড়ে রয়েছে গুলির খোল। এলাকাবাসীর দাবি, অভিযুক্ত গুড্ডু প্রায়শই আস্ফালন করেন এলাকায়। তাঁর ‘দাদাগিরি’তে সবাই অতিষ্ঠ। তবে গুড্ডুর হাতে এই প্রথম বন্দুক দেখলেন সন্ত্রস্ত এলাকাবাসী। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করে কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।