ছবি: এক্স থেকে নেওয়া।
বর্ষীয়ান আত্মীয়াকে যকৃতের একাংশ দান করার পর অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল ৩৩ বছর বয়সি বধূর। বেঙ্গালুরুর ওই গৃহবধূর নাম অর্চনা কামাথ। গত রবিবার বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৪ সেপ্টেম্বর যকৃতের প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি আত্মীয়াকে দান করে দিয়েছিলেন অর্চনা। কিন্তু জটিল অস্ত্রোপচারের পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর থেকে হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন তিনি। রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে তিনি যাঁকে অঙ্গদান করেছেন, সেই আত্মীয়া সুস্থ রয়েছেন বলেই খবর।
বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্রে খবর, যে আত্মীয়াকে অর্চনা যকৃৎ দান করেছিলেন, তিনি সম্পর্কে তাঁর মাসিশাশুড়ি। বহু দিন ধরে যকৃতের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ১৮ মাসেরও বেশি সময় তাঁরা দাতার সন্ধানে ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনও দাতার সন্ধান না মেলায় সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন অর্চনা। চিকিৎসকেরা সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে অর্চনাকে আগে থেকে জানিয়ে দিলেও তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন।
এর পর গত ৪ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচার হয় অর্চনার। অস্ত্রোপচারের এক দিন পর অর্চনাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত বুধবার থেকে একে একে তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করে। রবিবার হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে মারা যান অর্চনা। উল্লেখ্য, অর্চনা বেঙ্গালুরুর নামী সংস্থায় চাকরি করতেন। তাঁর স্বামী এক জন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। চার বছরের পুত্রও ছিল তাঁর। সোমবার কুন্দপুরে অর্চনাকে দাহ করা হয়েছে। বুধবার শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে।
অর্চনাকে নিয়ে একটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ভিডিয়োটি যিনি বানিয়েছেন, তিনি নিজেকে অর্চনার দেওর বলে পরিচয় দিয়েছেন। সেই ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, কী ভাবে প্রাণের বাজি রেখে যকৃৎ দান করেছিলেন তিনি। অর্চনার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছে বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন মহল। দক্ষিণ কন্নড়ের সাংসদ ক্যাপ্টেন ব্রিজেশ চৌতা তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘অর্চনার মৃত্যু আমাদের সকলের জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করার নজির সৃষ্টি করেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি সঠিক কাজ করছেন। অর্চনার এই সাহস তাঁকে স্মরণীয় করে রাখবে।”