Kolkata Cab Driver

‘মেজাজ দেখাবেন না’, উপদেশ দিয়ে কলকাতার ক্যাবচালক পড়তে দেন দিদার উপহার দেওয়া বই

অনলাইন ক্যাব সংস্থার মাধ্যমে গাড়ি চালান দীপক। আবার কখনও কখনও অন্য চালককেও সেই গাড়ি চালাতে দেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৫৬
গাড়িতে রাখা বই (বাঁ দিকে) এবং আসনে ঝুলিয়ে রাখা নিয়মাবলির কাগজ (ডান দিকে)।

গাড়িতে রাখা বই (বাঁ দিকে) এবং আসনে ঝুলিয়ে রাখা নিয়মাবলির কাগজ (ডান দিকে)। ছবি: নিজস্ব চিত্র।

অনলাইনে গাড়ি বুক করে উঠেছেন, দীর্ঘ ক্ষণ গাড়িতেই সময় কাটাতে হবে যাত্রীদের। সময় কাটানোর জন্য বই পড়ার বন্দোবস্ত রয়েছে। কিন্তু মেজাজ দেখিয়ে কথা বললে তা সইবেন না ক্যাবচালক। বরং আগে থেকেই যাত্রীদের ‘কড়া শাসন’-এর মধ্যে বেঁধে ফেলেছেন তিনি। আবার যাত্রীদের জন্য কী কী বই গাড়িতে রাখা উচিত, তা নিয়েও ক্যাবচালকের মনে চলে বিস্তর চিন্তাভাবনা।

Advertisement

কলকাতার রাস্তার গাড়ি চালান দীপক যাদব। পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা। নিজেরই গাড়ি তাঁর। অনলাইন ক্যাব সংস্থার মাধ্যমে সেই গাড়ি চালান দীপক। আবার কখনও অন্য চালককেও সেই গাড়ি চালাতে দেন। তবে তাঁর গাড়িতে উঠলে যাত্রীদের বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। গাড়ির সামনের আসন থেকে একটি কাগজ ঝুলিয়ে রেখেছেন দীপক। সেখানে যাত্রীদের উদ্দেশে লেখা রয়েছে নানাবিধ শর্ত।

কাগজে যাত্রীদের উদ্দেশ করে লেখা রয়েছে, ‘‘গাড়িতে ওঠার সময় দরজা আস্তে বন্ধ করবেন। আপনি কিন্তু এই গাড়ির মালিক নন। যিনি এই গাড়িটি চালাচ্ছেন, তিনি এই গাড়ির মালিক। সুতরাং গাড়ির চালকের সঙ্গে নম্র ব্যবহার করুন। নিজের পকেটে নিজের মেজাজ ভরে রাখুন। আপনার মেজাজ দেখার জন্য বেশি পয়সা পাই না। চালককে তাড়াতাড়ি গাড়ি চালানোর জন্য অনুরোধ করবেন না।’’

চালকের আসনের পিছনের পকেটে নজর পড়লে দেখা যায়, সেখান থেকে বই উঁকি দিচ্ছে। গাড়ির ভিতর রয়েছে দু’টি এনসাইক্লোপিডিয়া এবং ‘পিপলস’ প্রেসিডেন্ট: এপিজে আব্দুল কালাম’ নামের বই।

আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে দীপকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি বহু দিন ধরে গাড়ি চালাই। চালকদের সঙ্গে যাত্রীরা কী রকম ব্যবহার করেন তা সবই নিজের চোখে দেখা। তাই কাগজে ও সব লিখে রেখেছি।’’ গাড়িতে হঠাৎ বই রাখার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? দীপক জানান, সব সিদ্ধান্তই যাত্রীদের কথা ভেবে নেওয়া। তিনি নিজেও বই পড়তে ভালবাসেন।

দীপক বলেন, ‘‘গাড়ি বুক করলে তো ৩০-৪০ মিনিট ক্যাবের ভিতরেই যাত্রীদের বসে থাকতে হয়। যদি বই পড়ে সেই সময়টুকু কাটাতে চান তা হলে আমার ভালই লাগবে। তাই বেছে বেছে এমন বই রেখেছি যা পড়লে জ্ঞান অর্জন করা যায়। কালামের বইটা আমার দিদা উপহার দিয়েছিল আমায়। সেই বইটাও গাড়িতে রেখেছি।’’ যাত্রীরা যেন সকল ক্যাবচালকের সঙ্গে একটু হাসিমুখে কথা বলেন, এতটুকুই চাওয়া তাঁর। প্রয়োজন পড়লে গাড়ির ভিতর আরও বই রাখবেন, সে কথাও জানান তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন