মরুশহর জয়সলমেরকে হাভেলির শহরও বলা যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
শীতের ভাব কমে গেলেও বিয়ের মরসুম কিন্তু এখনও যায়নি। চারদিক থেকে ভেসে আসছে বিয়ের সুবাস। ইতিমধ্যে অনেকেই নতুন জীবনে পা রেখেছেন। কারও বিয়ের প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। বিয়ের সানাই বেজেছে বলিপাড়াতেও। সাত পাকে বাঁধা পড়ছেন বলিউড অভিনেতা কিয়ারা আডবাণী এবং সিদ্ধার্থ মলহোত্রা। ৬ ফেব্রুয়ারি, জয়সলমেরের থর মরুভূমির বুকে এক বিলাসবহুল হোটেলে বসতে চলেছে বিয়ের আসর। ইচ্ছা থাকলেও বলিউডি চল মেনে সকলের ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’ করা হয়ে ওঠে না। কিন্তু জয়সলমেরের রাজকীয় পরিবেশে সাত পাক ঘোরার ইচ্ছা যদি অপূর্ণ থেকেও যায়, মধুচন্দ্রিমা তো হতেই পারে অনায়াসে। নতুন জীবনের শুরুটা যদি মরুরাজ্য থেকে হয়, তা হলে মন্দ কী?
মরুশহর জয়সলমেরকে হাভেলির শহরও বলা যেতে পারে। শতাধিক বছরের পুরনো অসংখ্য প্রাসাদোপম হাভেলি রয়েছে সারা শহর জুড়ে। আর প্রতিটি হাভেলি অসাধারণ সব দেওয়ালচিত্র দিয়ে সাজানো। বিকেলের পড়ন্ত রোদে জয়সলমেরের শহরটি সত্যিই সোনার শহর বলে মনে হবে।
জয়সলমের শহরটি ঠিক থর মরুভূমির মাঝে। পাকিস্তান সীমান্ত থেকে প্রায় ৭০ মাইল দূরে। বিকানের থেকে জয়সলমেরের পথে মরুভূমি চোখে পড়বে। দীর্ঘ পথ জুড়ে শুধু বালি আর বালি। লোকালয় নেই বললেই চলে। বিস্তৃত মরুভূমি, ঝলমলে সাজানো উটের দল, ধূ ধূ নির্জনতা— জয়সলমের সত্যি ছবির মতো শহর।
জয়সলমেরে যাবেন আর সোনার কেল্লা যাবেন না, তা তো হয় না। মরুভূমির মধ্যে জেগে ওঠা এক চোখজোড়ানো স্থাপত্য। পড়ন্ত সূর্যের আলো দুর্গের গায়ে পড়লে যেন ম্যাজিক ঘটে। তখন আরও রহস্যময়ী হয়ে ওঠে পাহাড়ি উচ্চতায় শহরের এই মধ্যমণি।
এ ছাড়াও গদিসর লেক, নাথমলজি কি হাভেলি, গভর্নমেন্ট মিউজিয়াম, মন্দির প্যালেস, স্যান্ড ডিউনস— জয়সলমের আপনাকে এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার সামনে দাঁড় করাবে।
জয়সলমের গেলে ‘ডেজার্ট ক্যাম্পে’ থাকতে ভুলবেন না। অনেকেই অবশ্য উটে চড়ে মরুভূমির স্বাদ পেতে এখানে এক বার ঢুঁ মেরে যান। তবে এক রাত ক্যাম্পে না থাকলে আসল অনুভূতিটা পাওয়া যাবে না। ক্যাম্পগুলি জয়সলমের শহর থেকে প্রায় ৪৫ মিনিট দূরত্বে স্যাম স্যান্ড ডুন বলে একটি জায়গায় অবস্থিত। শেষের দিক থেকে কোনও একটি বেছে নিন। কারণ ওগুলি মরুভূমিতেই অবস্থিত। প্রাইভেট গাড়িতে করে জয়সলমের থেকে যেতে পারেন পাকিস্তানের বর্ডারেও। তবে জয়সলমের শহর থেকে সেখানকার দূরত্ব অনেকটাই বেশি। তবে তানোট বলে একটি গ্রাম আছে। সেখান থেকে এই বর্ডারের দূরত্বে ১০ কিলোমিটারের বেশি নয়। সেখানকার তনোট মাতার মন্দিরেও ভিড় জমান বহু পর্যটক।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে ট্রেনে করে পৌঁছতে জয়পুর। হাওড়া থেকে যোধপুর এক্সপ্রেস আর শিয়ালদহ থেকে আজমেঢ় এক্সপ্রেস। জয়পুর থেকে ট্রেন যায়, অথবা গাড়ি ভাড়া করে সড়কপথেও যেতে পারেন। বিমানে যেতে হলেও নামতে হবে জয়পুরে। সেখান থেকে জয়সলমের যাওয়ার উড়ান পাওয়া যাবে।
কোথায় থাকবেন?
জয়সলমেরে নানা রকম হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে। সুযোগসুবিধা অনুসারে সেগুলির দামও আলাদা। যাওয়ার আগে কোনও একটি বুক করে নিতে পারে। সামের ডেজার্ট ক্যাম্প আলাদা করে বুক করতে পারেন। অথবা জয়সলমেরের হোটেলে বলে দিন, সেখান থেকেও যোগাযোগ করিয়ে দেবে।