‘ডায়মন্ড ট্রায়াঙ্গেল’-এ ঘুরে আসুন ছবি সৌজন্য: ওড়িশা পর্যটন দপ্তর।
ললিতগিরি, রত্নগিরি এবং উদয়গিরি হল ওড়িশার ঐতিহাসিক তিনটি পর্যটনকেন্দ্র। এই তিনটি বৌদ্ধ কেন্দ্র একসঙ্গে ‘ডায়মন্ড ট্রায়াঙ্গেল’ নামেও পরিচিত। ললিতগিরি কটক জেলায় এবং রত্নগিরি ও উদয়গিরি উভয়ই ওড়িশার জাজপুর জেলায় অবস্থিত। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) এই অঞ্চলগুলিতে অসংখ্য খননকার্য চালিয়েছে এবং বর্তমানেও সেই কাজ চলছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই স্থানগুলির ঐতিহাসিক গুরত্ব অসীম। প্রায় জনশূন্য বনানীর মাঝে যে এমন বিস্ময়কর স্থান লুকিয়ে আছে, তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।
ললিতগিরি কটক জেলার মহঙ্গা ব্লকে অবস্থিত। ভুবনেশ্বর থেকে এর দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। ললিতগিরির অপর নাম ‘নালিতগিরি’। এই স্থানের প্রধান আকর্ষণ হল জাদুঘর। এখানে পর্যটকরা অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সঙ্গে গৌতম বুদ্ধের হাড় দেখতে পারেন। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে একটি সুবিশাল বৌদ্ধ স্তূপ।
রত্নগিরি জাজপুর জেলার বিরূপা নদীর কাছে অবস্থিত। এটিও একটি বৌদ্ধ কেন্দ্র। ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রথমার্ধে গুপ্ত রাজা নরসিংহ গুপ্ত বালাদিত্য এটি নির্মাণ করেন। দ্বাদশ শতাব্দীতে এই স্থানে বৌদ্ধ ধর্মের বিকাশ ঘটেছিল। এখানে একটি প্রধান স্তূপ রয়েছে, যা বেশ কয়েকটি মাঝারি এবং ছোট স্তূপ দ্বারা বেষ্টিত। প্রধান স্তূপগুলি বৌদ্ধ তীর্থস্থানের প্রতীক হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। এ ছাড়াও রয়েছে দু’টি বৌদ্ধ মঠ।
উদয়গিরি জাজপুর জেলায় অবস্থিত। এটি বৌদ্ধ তীর্থযাত্রার জন্য খুব জনপ্রিয়। রত্নাগিরি থেকে এই স্থানটির দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। এখানে বৌদ্ধ ভাস্কর্য-সহ একটি বড় ইটের মঠ রয়েছে। এখানকার অন্যতম মূল আকর্ষণ হল বোধিসত্ত্ব মূর্তি এবং ধ্যানরত বুদ্ধের মূর্তি।
কী ভাবে যাবেন?
হিউএনসাং পৌঁছে গিয়েছিলেন পায়ে হেঁটেই। তবে এখন অবশ্য এখানে যেতে হলে পরিব্রাজক হওয়ার দরকার নেই। ফলকনামা, ধৌলি বা করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করে কটক পৌঁছাতে হবে। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার পথ। আসতে পারেন জাজপুর কিংবা ধানমণ্ডল স্টেশনেও।
কোথায় থাকবেন?
থাকার সবচেয়ে ভাল জায়গা ওড়িশা পর্যটন দফতরের পান্থনিবাস। বুক করতে যোগাযোগ করতে পারেন কলকাতার উৎকল ভবনে। ঠিকানা কলকাতার লেনিন সরণি।