অস্ত্রোপচারের পরে ডান পা পচে গিয়েছিল কিশোরী ফুটবলারের। বাধ্য হয়ে সেই পা বাদ দিতে হয়েছিল। প্রতীকী চিত্র
খেলতে গিয়ে পায়ে চোট লেগেছিল চেন্নাইয়ের ১৮ বছরের ফুটবলার প্রিয়ার। চিকিৎসকেরা জানান, ডান পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়েছে তাঁর। অস্ত্রোপচার করাতে হবে। সেই অস্ত্রোপচারেই হয় ভুল। ডান পা পচে যায় প্রিয়ার। বাধ্য হয়ে পা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু পা বাদ দেওয়ার পরে অবস্থার আরও অবনতি হয়। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার সকাল ৭.১৫ মিনিটে চেন্নাইয়ের একটি সরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় প্রিয়ার। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি অঙ্গ বিকল হয়ে গিয়েছিল কিশোরী ফুটবলারের। তাই তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
জানা গিয়েছে, ৭ নভেম্বর পেরিয়ার নগর সরকারি হাসপাতালে ডান পায়ের লিগামেন্টে অস্ত্রোপচার হয়েছিল প্রিয়ার। প্রথম বার অস্ত্রোপচার সফল না হওয়ায় দ্বিতীয় বার অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তার পরে আর জ্ঞান ফেরেনি প্রিয়ার। তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল রাজীব গান্ধী সরকারি হাসপাতালে। সেখানে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল প্রিয়াকে।
ক্রমেই অবস্থার অবনতি হতে থাকে প্রিয়ার। বাধ্য হয়ে ডান পা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎকেরা। পা বাদ দেওয়ার পরে প্রিয়ার হৃদযন্ত্র, কিডনি ও লিভারের সমস্যা শুরু হয়। ধীরে ধীরে কিডনি ও লিভার বিকল হয়ে যায়। শেষে মৃত্যু হয় প্রিয়ার।
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেছেন প্রিয়ার ভাই লরেন্স। তিনি বলেছেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের পরে প্রিয়া বলেছিল, পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। রাতে তিন বার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল ওর। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাতে গুরুত্ব দেননি। ওষুধ খাইয়ে প্রিয়াকে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ধীরে ধীরে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তখন যদি চিকিৎসকেরা গুরুত্ব দিত তা হলে হয়তো ও মারা যেত না।’’
লরেন্স আরও জানিয়েছেন, ৮ নভেম্বর চিকিৎসকেরা তাঁদের জানান যে প্রিয়ার ডান পায়ের পেশিতন্তু শুকিয়ে গিয়েছে। পা বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। ৯ নভেম্বর প্রিয়ার পা কেটে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরে তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। তাঁকে ভেন্টিলেশনে পাঠানো হয়। আর জ্ঞান আসেনি প্রিয়ার।
কিশোরী ফুটবলারের মৃত্যুর খবরে শোকপ্রকাশ করেছেন তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমএ সুব্রহ্মন্যণ। প্রিয়ার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।