মোহনবাগানের দুই গোলদাতা অনিরুদ্ধ থাপা (বাঁ দিকে) ও জেসন কামিন্স। ছবি: এক্স।
মোহনবাগান- ২ (অনিরুদ্ধ থাপা, জেসন কামিন্স)
হায়দরাবাদ- ০
হায়দরাবাদকে হারিয়ে আইএসএলে জয়ে ফিরল মোহনবাগান। শুধু জয়ে ফেরা নয়, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সবুজ-মেরুন ফুটবলারেরা যে খেলাটা দেখালেন তা অনেকটাই স্বস্তি দেবে আন্তোনিয়ো লোপেজ় হাবাসকে। শনিবার বিকালের খেলায় নর্থইস্ট ইউনাইটেডের কাছে হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। তাই এই জয় দ্বিগুণ আনন্দ দিল সবুজ-মেরুন সমর্থকদের। হায়দরাবাদকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় এক লাফে চার নম্বরে উঠে এল মোহনবাগান।
গোটা ম্যাচে হায়দরাবাদের গোল লক্ষ্য করে ২৮টি শট মারল মোহনবাগান। তার মধ্যে ১৩টি টার্গেটে। বাগানের দুর্ভাগ্য যে দু’টির বেশি গোল করতে পারেনি তারা। গোটা ম্যাচে ৬০ শতাংশের বেশি বলের দখল ছিল সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের। এই পরিসংখ্যান বুঝিয়ে দিল, ফর্মে ফিরেছে বাগান। হাবাসের হাত ধরে আবার দাপট দেখাচ্ছে তারা।
হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে নিজের চেনা ছকে খেলল মোহনবাগান। দলের দখল যতটা সম্ভব নিজেদের কাছে রেখে আক্রমণ শুরু করল তারা। তার ফলও পাওয়া গেল। ১২ মিনিটে প্রথম গোল করলেন অনিরুদ্ধ থাপা। কর্নার থেকে গোললাইন সেভ করেন হায়দরাবাদের ডিফেন্ডার। কিন্তু বল বার করতে পারেননি তিনি। সেই ফাঁকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন অনিরুদ্ধ। সবুজ-মেরুন জার্সিতে নিজের প্রথম গোল করলেন তিনি।
এই ম্যাচে প্রথম একাদশে শুরু করেছিলেন মনবীর সিংহ। নিজের কাজ করলেন মনবীর। ক্রমাগত চাপ বাড়ালেন হায়দরাবাদের রক্ষণে। ৩১ মিনিটের মাথায় কিয়ান নাসিরিকেও নামিয়ে দিলেন হাবাস। ফলে চাপ আরও বাড়ল হায়দরাবাদের উপর। সেই চাপ থেকে সুফল তুলল বাগান। বিরতির ঠিক আগে ব্যবধান বাড়ালেন জেসন কামিন্স। দিমিত্রি পেত্রাতোসের কাছ থেকে বক্সের মধ্যে বল পান মনবীর। ঠান্ডা মাথায় কামিন্সের উদ্দেশে বল বাড়ান তিনি। বাঁ পায়ের শটে গোল করেন কামিন্স। দীর্ঘ দিন গোলের মধ্যে ছিলেন না কামিন্স। তাঁর গোলে ফেরা স্বস্তি দিল সমর্থকদের।
দ্বিতীয়ার্ধে তরুণ দীপেন্দু বিশ্বাসকে নামিয়ে দিলেন হাবাস। অভিষেক হল তাঁর। হাবাস বুঝিয়ে দিলেন নতুন ফুটবলার তুলে আনার কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে প্রথমার্ধের রিপ্লে হল। একের পর এক আক্রমণ করল মোহনবাগান। ৫৬ মিনিটের মাথায় পেত্রাতোসের বাঁ পায়ের শট ঝাঁপিয়ে বাঁচান হায়দরাবাদের গোলরক্ষক গুরমীত সিংহ। ফিরতি বলে কিয়ানের শটও বাঁচান তিনি।
৬১ মিনিটের মাথায় পরিবর্ত হিসাবে জনি কাউকোকে নামান হাবাস। হুগো বুমোসকে ছেড়ে কাউকোকে নেওয়া হয়েছে দলে। প্রথম ম্যাচেই তাঁকে নামিয়ে দিলেন তিনি। বাকি সময়টাতেও দাপট দেখাল বাগান। ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। কিন্তু বক্সের মধ্যে কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন সাহাল আবদুল সামাদ, কামিন্সেরা। কয়েকটি বল ভাল বাঁচান গুরমীত। অন্য দিকে মাঝেমধ্যে প্রতিআক্রমণে উঠলেও সেখান থেকে সুবিধা করতে পারেনি হায়দরাবাদ।
শেষ দিকে সুহেল ভাট, হামতের মতো তরুণদের নামিয়ে দিলেন হাবাস। তাঁরাও একের পর এক সুযোগ তৈরি করলেন। কিন্তু কোনও কারণে গোল আর হল না। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে জিতেই মাঠ ছাড়তে হল মোহনবাগানকে।