পর্তুগাল শিবিরে অশান্তি বাড়ছে। তার একমাত্র কারণ কি রোনাল্ডো? কী করছেন সিআর৭? —ফাইল চিত্র
প্রথম একাদশে সুযোগ না পেয়েও দল নির্বাচনের প্রশংসা করেছেন। আবার দলের বাকি ফুটবলাররা যখন উল্লাস করছেন, তখন দল থেকে দূরে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনও করছেন না। কত রূপ দেখা যাচ্ছে সিআর৭-এর! আর সব কিছু মিলিয়ে অশান্তি বেড়েই চলেছে পর্তুগাল শিবিরে।
সুইৎজ়ারল্যান্ডকে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ৬-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে পর্তুগাল। জয়ের পরে দলের ফুটবলাররা উল্লাস করছিলেন। গ্যালারিতে থাকা সমর্থকদের সামনে গিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছিলেন তাঁরা। প্রথমে কিছু ক্ষণ রোনাল্ডো সেখানে ছিলেন। তার পরে তিনি টানেল ধরে সাজঘরে চলে যান। বাকিরা তখনও মাঠে ছিলেন। রোনাল্ডোর মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া নজর এড়ায়নি সমর্থকদের। সেই ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো প্রকাশ পেয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, পর্তুগাল শিবিরে অনুশীলন ঘিরেও অশান্তি হয়েছে। সংবাদপত্র ‘মার্কা’ জানিয়েছে, বুধবার পর্তুগিজ দলের অনুশীলনে যোগ দেননি রোনাল্ডো। সেই অনুশীলনে আগের ম্যাচের প্রথম একাদশের ফুটবলারদের বিশ্রাম দিয়েছিলেন কোচ ফের্নান্দো স্যান্টোস। বাকিরা অনুশীলন করছিলেন। তাঁদের সঙ্গে অনুশীলন করতে চাননি রোনাল্ডো। তার বদলে প্রথম একাদশের ফুটবলারদের সঙ্গে জিমে সময় কাটান তিনি।
কোচ স্যান্টোসের সঙ্গে সংঘাত চলছে রোনাল্ডোর। যদিও তাঁদের কেউই এটা মেনে নেননি। সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে রোনাল্ডোকে প্রথম একাদশের বাইরে রাখেন কোচ। তাঁর বদলে জায়গা করে নেন গনসালো র্যামোস। তিনি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই হ্যাটট্রিক করেন। ৭২ মিনিট পর্যন্ত রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকলেও দল নির্বাচনের প্রশংসা করেছেন রোনাল্ডো। ৬-১ গোলে ম্যাচ জিতে ইনস্টাগ্রামে রোনাল্ডো লেখেন, “পর্তুগালের জন্য একটা দারুণ দিন। বিশ্ব ফুটবলের সব থেকে বড় প্রতিযোগিতায় ঐতিহাসিক ফল। প্রতিভা এবং তারুণ্যের মিশেল দেখা গিয়েছে। যে দল নির্বাচন করা হয়েছিল, সেটাকে প্রশংসা করতেই হবে। স্বপ্নের দৌড় চলছে। শেষ পর্যন্ত চলবে।”
রোনাল্ডো নিজের বাদ পড়া নিয়ে কিছু না বললেও তাঁর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজ় একেবারেই খুশি হতে পারেননি। তিনি সরাসরি কোচ স্যান্টোসকে আক্রমণ করেছেন। ম্যাচ শেষে ইনস্টাগ্রামে নিজের ছবি দেন জর্জিনা। পর্তুগালের খেলা দেখার জন্য মাঠে উপস্থিত ছিলেন তিনি। জর্জিনা নিজের ছবি দিয়ে লেখেন, “পর্তুগালকে অভিনন্দন। কিন্তু ১১ জন ফুটবলার যখন জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে, সেই সময় একজনকেই খুঁজছিল সকলে। এটা লজ্জার যে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ফুটবলারের খেলা পুরো ৯০ মিনিট দেখতে পেল না কেউ। ভক্তরা তোমার জন্য চিৎকার করছিল। তারা দাবি জানাচ্ছিল তোমাকে দেখার। আশা করি ঈশ্বর এবং তোমার বন্ধু ফের্নান্দো এক হবে আর তোমাকে আবার খেলতে দেখব।”
এখানে জর্জিনা যে রোনাল্ডোকে বুঝিয়েছেন তা বলাই যায়। পর্তুগালের কোচ স্যান্টোসের সঙ্গে ঝামেলা চলছে রোনাল্ডোর। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে রোনাল্ডো তুলে নেওয়ার সময় অঙ্গভঙ্গি করেন তিনি। যা একেবারেই পছন্দ হয়নি স্যান্টোসের। এর পরেই পর্তুগালের কোচ জানিয়েছিলেন যে, প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে রোনাল্ডোকে না-ও খেলাতে পারেন তিনি। সেটাই দেখা গিয়েছে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেও দলের অন্দরের ছবি যে খুব একটা ভাল নয় তা বুঝিয়ে দিচ্ছে এই ছোট ছোট ঘটনা।