অস্কার ব্রুজ়ো। —ফাইল চিত্র।
প্রথমার্ধের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল, আরও একটি ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়তে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বদলে গেল দল। ০-২ পিছিয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গল ৪-২ গোলে পঞ্জাবকে হারিয়েছে। দলের লড়াইয়ে খুশি লাল-হলুদ কোচ অস্কার ব্রুজ়ো। তিনি আশাবাদী, এই জয় দলের ইতিহাসে লেখা থাকবে। ফুটবলারদের সিংহের সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি।
প্রথমার্ধের খেলা শেষে বিরতিতে দলকে তাতিয়েছিলেন ব্রুজ়ো। তাতেই বদলে যায় খেলা। জয়ের পরে ব্রুজ়ো বলেন, “প্রথমার্ধে দলের খেলা দেখে আমি খুব হতাশ হয়েছিলাম। কিছুই ঠিক হচ্ছিল না আমাদের। বিরতিতে ছেলেদের বলি, দ্বিতীয়ার্ধেও যদি এমনই বাজে পারফরম্যান্স হয়, তা হলে আমাদের পক্ষে পুরো ৯০ মিনিটও দাঁড়ানো মুশকিল হবে। দ্বিতীয়ার্ধে ছবিটা পুরো বদলে যায়। প্রথমার্ধে যা যা ঠিক হচ্ছিল না, বিরতির পর সেগুলোই ঠিক হতে শুরু করে। এই ম্যাচ থেকেই আমাদের ঘুরে দাঁড়ানো শুরু।”
ব্রুজ়ো মনে করেন, দলের ফুটবলারদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা হচ্ছিল। তাঁর পরিকল্পনা বা ফুটবলারদের খেলার ধরনে কোনও ভুল ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে সেটাই দেখা গিয়েছে। ব্রুজ়ো বলেন, “আসলে সমস্যাটা টেকনিক বা পরিকল্পনায় ছিল না। ছিল আত্মবিশ্বাস, সাহসিকতা ও মানসিকতায়। দ্বিতীয়ার্ধে ছেলেরা যা খেলেছে, তার প্রশংসা করতেই হবে। ওরা সিংহের মতো খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধে যে পরিবর্তনগুলো করেছি, সবগুলো কাজে লেগেছে। আশা করি, ইস্টবেঙ্গলের ইতিহাসে এই ঘুরে দাঁড়ানোর ঘটনা উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা থাকবে।”
বিরতির পরে মহেশ নাওরেমকে তুলে নিয়ে পিভি বিষ্ণুকে নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ। তার পরেই খেলা বদলে যায় দলের। অনেক বেশি আক্রমণাত্মক খেলতে শুরু করে দল। বিষ্ণু গোলও করেন। তরুণ এই ফুটবলারের প্রশংসা শোনা গিয়েছে লাল-হলুদ কোচের মুখে। তিনি বলেন, “বিষ্ণু নামার পর থেকেই ছবিটা পুরো বদলে যায়। উইং দিয়ে আরও বেশি আক্রমণ হতে শুরু করে। ক্লেটন এই ম্যাচে শুধু যে আক্রমণ করেছে তা নয়, মাঝমাঠেও অনেকটা চাপ নিয়েছে। সেই জন্য দ্বিতীয়ার্ধে মাঝমাঠে আমাদের নিয়ন্ত্রণও ওদের চেয়ে বেশি ছিল।”
তিনি নিজে আক্রমণাত্মক ফুটবল ভালবাসেন। ফুটবলারদের মধ্যেও সেই মনোভাব দেখতে চান তিনি। ব্রুজ়ো জানেন, জিততে গেলে ঝুঁকি নিতেই হবে। সেটা নিতে চান লাল-হলুদ কোচ। ব্রুজ়ো বলেন, “আমি নিজে আক্রমণাত্মক ফুটবলই পছন্দ করি। সব সময় চাই যে, আমার দল প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশি গোলের সুযোগ তৈরি করুক। জিততে গেলে আমাদের ঝুঁকি নিতেই হবে। তবে ঝুঁকির পরিমান যত কম হয়, ততই ভাল।”
পঞ্জাবকে হারানোর পর ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট ইস্টবেঙ্গলের। যদিও এখনও ১১ নম্বরেই রয়েছে তারা। শনিবার, ঘরের মাঠে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে খেলবে তারা। এই জয়ের ধারা বজায় রাখতে চান কোচ। তিনি চান, মঙ্গলবারের মতো আরও এক বার সমর্থকদের মুখে হাসে ফেরান লাল-হলুদ ফুটবলারেরা।