সন্দীপ লামিছানে। —ফাইল চিত্র
নাবালিকাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সন্দীপ লামিছানেকে এশিয়া কাপের দলে নিল নেপাল। লামিছানের আইনজীবী এ কথা জানিয়েছেন। ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই তাঁকে নেপালের দলে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
লামিছানের আইনজীবী সরোজ ঘিমিরে বলেন, ‘‘ওর বিরুদ্ধে মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। তাই ওর দলে ফিরতে কোনও বাধা নেই। পাকিস্তানে খেলতে যাচ্ছে লামিছানে।’’ যদিও এই বিষয়ে নেপালের ক্রিকেট দল কিছু জানায়নি।
গত বছর অগস্টে কাঠমান্ডুর একটি হোটেলে ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত লামিছানে। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর সেপ্টেম্বরে তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল নেপালের আদালত। গ্রেফতারি এড়াতে বেশ কিছু দিন বিদেশে ছিলেন তিনি। ক্যারিবিয়ান লিগ খেলতে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়েই থেকে যান। বেশ কিছু দিন পর ফেরেন নেপালে। গত বছর ৬ অক্টোবর দেশে ফেরার পর কাঠমান্ডু বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল লামিছানেকে।
নেপাল পুলিশ জানায়, গত বছর ২২ অগস্ট মাসে নেপাল ক্রিকেট দলের কেনিয়া সফরের আগে লামিছানে এক কিশোরীকে ভক্তপুরে ঘুরতে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিশোরী রাজি হন। রাতে ওই কিশোরী মধ্য বানেশ্বরে নিজের হস্টেলে ফিরে যেতে চাইলে লামিছানে বাধা দেন। হস্টেল আটটার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হোটেলে লামিছানের সঙ্গে রাত কাটাতে বাধ্য হন ওই কিশোরী। প্রথমে তিনি আলাদা ঘরে থাকতে চান। সেটাও হতে দেননি লামিছানে। তার বদলে নিজের ঘরে ডেকে এনে ওই কিশোরীকে দু’বার ধর্ষণ করেন লামিছানে। যদিও প্রথম থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লামিছানে।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পরেই দলের অধিনায়কের পদ থেকে লামিছানেকে সরিয়ে দেয় নেপাল ক্রিকেট বোর্ড। তাঁকে দল থেকেও বাদ দেওয়া হয়। যদিও চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই দেশের তারকা লেগ স্পিনারের উপর থেকে নির্বাসনের শাস্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল নেপালের ক্রিকেট সংস্থা। সেই মাসেই ঘরের মাঠে নামিবিয়া এবং স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক দিনের ত্রিদেশীয় সিরিজ়ের জন্য ঘোষিত দলে ২৩ বছরের ক্রিকেটারকে রাখে তারা।
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ নেপালের সভাপতি চতুর বাহাদুর চাঁদ সেই সময় বলেছিলেন, ‘‘বোর্ড লামিছানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। ওকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। শাস্তি শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন ওর খেলতে কোনও সমস্যা নেই।’’ ২০ লক্ষ নেপালি টাকার বিনিময় লামিছানেকে জামিন দিয়েছিল হাই কোর্ট। আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নেপালের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন নেপালের অ্যাটর্নি জেনারেল। তাঁর দফতরের মুখপাত্র সঞ্জীব রাজ রেগমি বলেন, ‘‘হাই কোর্টের রায়ের জামিনের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে। যে কোনও ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীর তিন বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। এমন অপরাধীর অবশ্যই হেফাজতে থাকা উচিত।’’