ঋষভ পন্থ। ছবি: এএফপি।
সিডনি টেস্টের আগে গৌতম গম্ভীর তাঁকে ‘ধমক’ দিয়েছিলেন বলে শোনা গিয়েছে। ম্যাচের আগের দিনও নাম না করে তাঁর খামখেয়ালি শট খেলার প্রবণতার সমালোচনা করেছিলেন। সেই ‘ধমক’ খাওয়ার পর ঋষভ পন্থ বললেন, তিনি নাকি পরিস্থিতি বুঝেই খেলেন। তবে কেন দলের খারাপ সময়েও তিনি আক্রমণাত্মক শট খেলতে যান, তার কোনও উত্তর দিতে পারেননি।
সিডনিতে ৯৮ বলে ৪০ রান করেছেন। তিনিই দলের সর্বোচ্চ রান করেছেন। কিন্তু ৫৭ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ভারত যখন সমস্যায়, তখনও ক্রিজে এসে দু’-একটি খারাপ শট খেলেছেন। ইনিংসের মাঝেও কয়েকটি খারাপ শট মেরেছেন। শেষ পর্যন্ত আউট হন অকারণে খারাপ শট খেলে। গত টেস্টে মেলবোর্নেও একই ঘটনা ঘটেছিল। ধরেই খেলেছিলেন। ১০৪ বলে ৩০ রান করেন। তার পর মারতে গিয়ে একটি খারাপ শট খেলেন। সেটাই দলকে ডুবিয়ে দেয়। শুক্রবারও তিনি আগের তুলনায় অনেক বেশি বল খেলেছেন।
নিজের ইনিংস নিয়ে ম্যাচের পর জানান, পরিস্থিতির কারণে আগ্রাসী হওয়ার সুযোগ পাননি। পন্থের কথায়, “এই ইনিংসে আমি এমন মানসিকতা নিয়ে নামিনি যে চালিয়ে খেলতেই হবে। কারণ যে পরিস্থিতিতে আমরা ছিলাম এবং উইকেট যে ভাবে আচরণ করছিল তাতে চালিয়ে খেলার সুযোগ ছিল না। কখনও-সখনও ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে খেলতে হয়। আমরা জানতাম আর একটা উইকেট হারালে আরও হয়তো ২-৩টে উইকেট পড়ে যাবে। তাই নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখে খেলেছি।”
মেলবোর্নে ট্রেভিস হেডকে পুল করতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন পন্থ। সেই শট দেখে সুনীল গাওস্কর ‘স্টুপিড’ বলেছিলেন। তবে পন্থের দাবি, পরিস্থিতি বুঝেই তিনি আক্রমণ করেন। ভারতের উইকেটকিপার বলেছেন, “আক্রমণ করার জন্য নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। সেই ভাবনাটা ভিতর থেকে আসে। আমি আগে থেকে ঠিক করে রাখতে পারি না যে এ ভাবেই খেলব। যে দিন ম্যাচের পরিস্থিতি যেমন থাকবে, সেই অনুযায়ী খেলব।” তবে মেলবোর্নে ভারতের পরিস্থিতি খারাপ থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি ও রকম শট খেলতে গেলেন তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
পন্থের মতে, প্রত্যেকেরই ক্রিকেট খেলার একটা নিজস্ব ধরন রয়েছে। তবে উল্টো দিকটাও জেনে রাখা উচিত। তাঁর কথায়, “যে ভাবে ক্রিকেট খেলে এসেছেন সে ভাবেই খেলাটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু রোজই নিজেকে উন্নত করতে হয়। আমার মতে, ক্রিকেট খেলার নির্দিষ্ট একটা ধরন থাকা উচিত নয়। তবে যে খেলাটা স্বাভাবিক ভাবে আপনার আসে, তাঁকেও ভুলে যাওয়া চলবে না।”
শুক্রবার ব্যাটিংয়ের সময় অনেক বার শরীরে আঘাত খেয়েছেন পন্থ। মাটিতে পড়েও গিয়েছেন। তা নিয়ে এই উইকেটকিপার বললেন, “ব্যথা লেগেছে ঠিকই। তবে কখনও-সখনও দলের জন্য এ রকম ব্যথা হজম করতে হয়। শরীরের কোথায় লেগেছে সেটা কখনওই ভাবিনি। ভাবছিলাম কী ভাবে পরের বলটা আরও ভাল ভাবে খেলব। এই প্রথম বার আমার শরীরে এতগুলো বল লেগেছে।”
রোহিত শর্মাকে বিশ্রাম দেওয়ার প্রসঙ্গও উঠে আসে সাংবাদিক বৈঠকে। পন্থ অবশ্য বিতর্কে জড়াতে চাইলেন না। বলেছেন, “খুব আবেগপ্রবণ মুহূর্ত। ও-ই আমাদের নেতা। তবে দল পরিচালন সমিতি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি তার মধ্যে নেই। তাই এ ব্যাপারে আর বলতে পারব না।”