ঋষভ পন্থ। —ফাইল চিত্র।
একটি দুর্ঘটনা ঋষভ পন্থের ক্রিকেট জীবনের ১৫ মাস কেড়ে নিয়েছিল। প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল আইপিএলে। এই বছরই ক্রিকেটে ফিরেছিলেন তিনি। আইপিএলের পর ভারতীয় দলের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়, টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন হয়ে গিয়েছে তাঁর। এ বার আইপিএলের নিলামে তিনি নেমেছিলেন নিজের দর যাচাই করতে। সেটাও হয়ে গেল। লখনউ সুপার জায়ান্টস পন্থকে কিনে নিল ২৭ কোটি টাকায়।
নিলামের টেবিলে ঝড় তুললেন পন্থ। শ্রেয়স আয়ারকে টপকে এই মুহূর্তে তিনি আইপিএলের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার। পন্থকে লখনউ নেওয়ার ২০ মিনিট আগে ২৬ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় শ্রেয়সকে নিয়েছিল পঞ্জাব। তিনি আইপিএলের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার হয়েছিলেন। ২০ মিনিটের মধ্যে সেই রেকর্ড ভেঙে গেল। পন্থকে লখনউ কিনে নিল ২৭ কোটি টাকায়।
পন্থকে নেওয়ার জন্য শুরু থেকেই ঝাঁপিয়েছিল লখনউ। তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে ছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। কিন্তু পন্থের দাম ১০ কোটি ছাড়াতেই পিছিয়ে যায় আরসিবি। এর পর লখনউয়ের সঙ্গে দর হাঁকতে শুরু করে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ২০ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা দাম ওঠার পর ছেড়ে দেয় তারা। পন্থকে আরটিএম কার্ডের মাধ্যমে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। কিন্তু হায়দরাবাদ ২৭ কোটি টাকা দিতে চায়। তার পর আর এগোয়নি দিল্লি।
২০১৬ সালে পন্থের আইপিএল অভিষেক হয়। আইপিএলের শুরু থেকেই দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়েই খেলেছেন তিনি। ১১১টি ম্যাচে করেছেন ৩২৮৪ রান। অর্ধশতরান করেছেন ১৮টি, শতরান একটি। পন্থকে দলে নেওয়া মানে উইকেটরক্ষক এবং ব্যাটার পেয়ে যাওয়া। প্রয়োজনে নেতৃত্বের দায়িত্বও নিতে পারেন। এমন এক জন ব্যাটারকে দলে নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছিল অনেক দলই। কিন্তু শেষ হাসি হাসল লখনউ।
৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ ভুলে যেতে চাইলেও পন্থ কোনও দিন ভুলতে চাইবেন না ২৩ মার্চ, ২০২৪ দিনটিকে। সেই দিনই তো মাঠে ফিরেছিলেন তিনি। গোটা ভারত সেই দিন দেখেছিল তাঁর প্রত্যাবর্তন। নতুন জীবন পাওয়া পন্থ মাঠে ফিরে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন গাড়ি দুর্ঘটনা অতীত। দুর্ঘটনায় পন্থের ডান হাঁটুর প্রতিটি লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সে সময় তিনি ভেবেছিলেন, হয়তো বাঁচবেন না। সুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসক এবং বিসিসিআইকে পন্থ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন দ্বিতীয় জীবন দেওয়ার জন্য। মনের জোরে বিদায় জানিয়েছেন সঙ্গী হয়ে যাওয়া হুইলচেয়ার, ক্রাচকে। মাটিতে পা ফেলেছেন যন্ত্রণা উপেক্ষা করে। এক পা এক পা করে হাঁটার চেষ্টা করেছেন। জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন ধাপে ধাপে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে। অনিশ্চিত ক্রিকেট ভবিষ্যৎকে নিশ্চিত করেছেন। চিকিৎসকদের কৃতিত্ব অস্বীকার করার জায়গা নেই। কৃতিত্ব কম নয় ২৬ বছরের তরুণেরও। মনে করা হয়েছিল তাঁর মাঠে ফিরতে অন্তত ১৮ মাস সময় লাগবে। পন্থের একাগ্রতা সেই সময় তিন মাস কমিয়ে দিয়েছে।