Climate Change

কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমাতে সংকল্প, পড়ুয়াদের প্রতি বার্তা কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রীর

বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে রোজের জীবনেও পরিবর্তন প্রয়োজন। বিকল্প পদ্ধতিতে জ্বালানি ব্যবহারের মতো একাধিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি এবং পর্যটন মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত।

Advertisement
স্বর্ণালী তালুকদার
শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:১৫
The Union Culture Minister discussed the effects of global warming.

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

কার্বন নিঃসরণের মাত্রার নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। তাই বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব কমাতে তৎপর কেন্দ্র। জনসাধারণকে বৃক্ষরোপণের মতো বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নিয়মিত সচেতনতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি কলকাতার ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজ়িয়াম (এনসিএসএম)-এর অধীনস্থ সায়েন্স সিটির তরফে এক নবনির্মিত গ্যালারিতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন বিষয় আকর্ষণীয় ভাবে সাজানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি এবং পর্যটন মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত ১১ জানুয়ারি ওই গ্যালারি আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন। ওই গ্যালারির মাধ্যমে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করতে কী করণীয়, তা প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিশদ দেখানো হয়েছে।

Advertisement
The Union Minister of Culture at the gallery inauguration event.

গ্যালারি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী প্রজন্মকে এই বিষয়গুলি শেখাতে এবং সচেতন করতে এই গ্যালারি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সরকারের তরফে নিয়মিত ভাবে দেশের বিভিন্ন অংশে বৃক্ষরোপণ এবং বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের অভ্যাস সম্পর্কে সচেতনতা জারি করা হচ্ছে। তবে বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণ করতে মানুষকে রোজের জীবনেও পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রয়োজনে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমাতে সর্ব স্তরের ব্যক্তিদের পাশাপাশি আগামী প্রজন্মকেও সংকল্প করতে হবে, যাতে পৃথিবী আরও সবুজ এবং সতেজ হয়ে ওঠে। গ্যালারির বিষয়বস্তু বর্তমান পরিস্থিতির সাপেক্ষে যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক।’’

১০ হাজার স্কোয়্যার ফুট এলাকা জুড়ে তৈরি হওয়া ‘অন দি এজ?’ শীর্ষক গ্যালারির প্রবেশপথে বসানো হয়েছে বিশ্বের প্রতিরূপ, যার মাধ্যমে সার্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, জলস্তর বৃদ্ধি হওয়ার মতো বিভিন্ন বিষয় বোঝানো হয়েছে। গ্যালারির ভিতরে ১২ ফুটের একটি এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে ক্রমাগত চলতে থাকা ভিডিয়োবার্তায় গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব, উষ্ণতা বৃদ্ধি, আবহাওয়ার পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের বিষয়গুলি দেখানো হয়েছে।

The Union Minister of Culture at the gallery inauguration event.

গ্যালারি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

সায়েন্স সিটির কিউরেটর শুভ্রশঙ্কর ঘোষের সঙ্গে গ্যালারির বিভিন্ন ডিসপ্লে ঘুরে দেখেন শেখাওয়াত। গ্যালারি পরিদর্শনের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, যে ভাবে কার্বণ নিঃসরণের মাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্বাভাবিক পরিবেশের ছবি বদলে যাবে। তাই জনসাধারণ তো বটেই, আগামী প্রজন্মকেও অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার কিংবা বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করার মতো বিষয়ে বিশেষ ভাবে সচেতন হতে হবে।

গ্যালারি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি এবং পর্যটন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব সঞ্জয় কউল, বটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর আসিহো আসোউ মাও, এনসিএসএমের ডিরেক্টর জেনারেল অরিজিৎ দত্তচৌধুরি এবং সায়েন্স সিটির ডিরেক্টর অনুরাগ কুমার।অনুষ্ঠানের স্বাগত ভাষণে এনসিএসএমের ডিরেক্টর জানিয়েছেন, গুরুগম্ভীর তথ্য দিয়ে সাজানো দৃশ্যপটে বার্তা দেওয়া বদলে সব বয়সের দর্শকদের জন্য ইন্টার‌্যাক্টিভ ডিসপ্লে বসানো হয়েছে। এতে অনেক সহজেই জলবায়ু পরিবর্তন বা কার্বন নিঃসরণের পদ্ধতিতে মানুষের ভূমিকা বুঝিয়ে দেওয়া যাবে। এতেই পৃথিবীকে সুরক্ষিত রাখার পথে আরও এক ধাপ এগোনো সম্ভব।

The Union Minister of Culture and distinguished guests at the gallery inauguration ceremony.

গ্যালারি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিশিষ্ট অতিথিরা। নিজস্ব চিত্র।

বটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর আগামী প্রজন্মকে বার্তা দিয়েছেন, কী ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করা সম্ভব, সেই বিষয়ে পড়ুয়াদের অনেক বেশি সচেতন থাকা প্রয়োজন। এই গ্যালারি থেকে বহু পড়ুয়া যথেষ্ট উপকৃত হতে চলেছে, এমনটাই আশা তাঁর।এ ছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা, বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা, প্রবাল প্রাচীর পুনঃস্থাপনের উপকারিতার মতো একাধিক বিষয়ে একাধিক ডিসপ্লে এই গ্যালারিতে সাজানো হয়েছে। এই গ্যালারি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন সায়েন্স সিটি এবং এনসিএসএমের বিভিন্ন বিভাগের কিউরেটর, বিজ্ঞানী, আধিকারিক-সহ কলকাতার বিভিন্ন স্কুলের ৫০০র বেশি পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।

Multiple interactive displays related to coping with natural disasters, the need for tree planting, and the benefits of coral reef restoration have been placed in the gallery.

প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা, বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা, প্রবাল প্রাচীর পুনর্স্থাপনের উপকারিতা সম্পর্কিত একাধিক ডিসপ্লে গ্যালারিতে রাখা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

সায়েন্স সিটির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পাঠ্যবইয়ের বাইরেও স্কুলের পড়ুয়াদের বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন এবং সেই সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়গুলি বিশদ ভাবে জানানো প্রয়োজন। একই সঙ্গে বাড়তে থাকা দূষণের সঙ্গে কী ভাবে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কার্যকলাপ জড়িয়ে রয়েছে এবং সেই অভ্যাস কী ভাবে পরিবর্তন করা যেতে পারে, সেই বিষয়টিও গ্যালারি পরিদর্শন করলে তারা বুঝতে পারবে। দ্রুতই জনসাধারণের জন্য এই গ্যালারি খুলে দেওয়া হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন