ভারতের মাটিতে প্রথম শতরানের পর উসমান খোয়াজা। ছবি: পিটিআই
আমদাবাদ টেস্টে উসমান খোয়াজা প্রথম দিনের শেষে ১০৪ রানে অপরাজিত। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এই সিরিজ়ে সব থেকে বেশি রান এখনও পর্যন্ত তিনিই করেছেন। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে এটাই তাঁর প্রথম শতরান। এর আগে ভারতের মাটিতে টেস্টও খেলেননি খোয়াজা। প্রথম বার খেলতে এসেছেন এই সিরিজ়ে। তাঁকে নাকি বলা হয়েছিল যে, তিনি স্পিন খেলতে পারেন না। সেই কারণেই এর আগে দলে নেওয়া হত না তাঁকে।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় বোলারদের উপর প্রায় একাই ছড়ি ঘোরালেন খোয়াজা। শতরান করে তাঁর হাসি ভোলা যাবে না। ভারতের মাটিতে এই শতরান তাঁর কাছে বেশ স্পেশাল। ২০১৩ এবং ২০১৭ সালে ভারতে এসে শুধু জল বইতেন খোয়াজা। তাই এ বার সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করে দিলেন। প্রথম দিনে ২৫৫ বলে ১০৪ রান করে খোয়াজা বলেন, “আমার মনে হয় না কোনও শতরান করে এত হেসেছি। দারুণ আনন্দ পেয়েছি। এর আগে দু’বার ভারত সফরে এসেছিলাম। সে বার শুধু জল বয়ে কেটে গিয়েছিল।”
৩৬ বছরের খোয়াজাকে বলা হয়েছিল যে, তিনি স্পিন খেলতে পারেন না। খোয়াজা বলেন, “আমার কেরিয়ারের মাঝের দিকে বার বার শুনেছি যে আমি স্পিন খেলতে পারি না। সেই কারণে ভারতে কখনও খেলার সুযোগ দেওয়া হয়নি আমাকে। ভাল লাগছে ভারতের মাটিতে শতরান করে। পাঁচ বছর আগে আমাকে যদি এটা বলা হত, তা হলে আমি হয়তো হেসে উড়িয়ে দিতাম। আমি কখনও ভাবিনি যে, ভারতের মাটিতে শতরান করব। আমার মধ্যে একটা আবেগ কাজ করছে।”
লোকে বলত যে তিনি স্পিন খেলতে পারেন না। এটা খোয়াজার নিজের মনের মধ্যেও এসে গিয়েছিল বলে জানালেন তিনি। খোয়াজা বলেন, “কখনও হয়তো স্পিনের বিরুদ্ধে আউট হয়েছি, আমাকে বলা হল যে আমি স্পিন খেলতে পারি না। এটা হয়তো অনেকে ভাবত। সেটা আমাকে বলত। শুনতে শুনতে নিজেও হয়তো এটা বিশ্বাস করতে শুরু করে দিয়েছিলাম।”
সেই সময় দলের থেকে কোনও সাহায্য পাননি বলেও জানান খোয়াজা। তিনি বলেন, “আমি কারওর থেকে সাহায্য পাইনি ওই সময়। দল আমাকে সমর্থন করেনি। সেই সময় কোনও কোচ বা নির্বাচকরাও আমার পাশে দাঁড়ায়নি। খুব কঠিন ছিল সময়টা। হ্যাঁ, এখন আমি স্পিন ভাল খেলি। স্পিনের বিরুদ্ধে অনেক ধরনের শট আমার হাতে আছে। কিন্তু সেই সময় আমাকে সুযোগই দেওয়া হয়নি স্পিনের বিরুদ্ধে খেলাটা শেখার।”
তা হলে তিনি এখন ভাল খেলছেন কী করে? খোয়াজা বলেন, “আমি খুব জেদি। নিজেই নিজেকে শিখিয়েছি। ভারতে এসে ‘এ’ দলের হয়ে দু’বার খেলি। সেটা আমাকে খুব সাহায্য করে। দেশে ফিরে আমি নিজের খেলা পর্যালোচনা করি। সেখান থেকেই নিজেকে স্পিনের বিরুদ্ধে খেলার যোগ্য করে তুলি।”