শ্রেয়স আয়ার। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে পারলেন না শ্রেয়স আয়ার। খেলা শুরুর কিছু ক্ষণ আগে তাঁর হঠাৎ পিঠে ব্যথা শুরু হয়। ফলে তাঁকে প্রথম একাদশে রাখার ঝুঁকি নেননি রাহুল দ্রাবিড়, রোহিত শর্মারা। শেষ মুহূর্তে দলে নেওয়া হয় চোট সারিয়ে দলে ফেরা আর এক ক্রিকেটার লোকেশ রাহুলকে।
চোটে চোটে জর্জরিত শ্রেয়স। চোটের জন্য গত আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি। তাঁর পরিবর্তে কলকাতাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নীতীশ রানা। আইপিএল শুরুর আগেই পিঠের চোটের জন্য ভারতীয় দল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন শ্রেয়স। গত এপ্রিলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) তাঁকে লন্ডনে পাঠায় অস্ত্রোপচারের জন্য। তার পর থেকে শ্রেয়স ছিলেন বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। সেখানে তাঁর রিহ্যাব প্রক্রিয়া চলেছে। ধাপে ধাপে ম্যাচ ফিট করে তোলা হয়েছে শ্রেয়সকে। প্রায় ছ’মাস পর ভারতীয় দলে ফিরেছেন এশিয়া কাপে। দু’টি ম্যাচ খেলেই আবার পিঠে ব্যথা।
বিশ্বকাপের আগে আবার ভারতীয় শিবিরের উদ্বেগ বৃদ্ধি করলেন ২৮ বছরের ব্যাটার। প্রশ্ন উঠতে পারে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির দেওয়া ফিটনেস রিপোর্ট নিয়েও। এত দিন রিহ্যাব করার পর মাত্র দু’টি ম্যাচ খেলেই কেন পিঠের ব্যথায় কাবু হয়ে পড়লেন শ্রেয়স? তা হলে কি তাঁর চোট ঠিক মতো সারেনি। বিশ্বকাপের জন্য দ্রুত মাঠে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে?
গত মার্চ মাসে আমদাবাদে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন শ্রেয়স। ভারতীয় দলের ব্যাটিং অর্ডারের চার নম্বরে শ্রেয়সকে ভাবা হচ্ছিল। দলকে ভরসা দিতেও শুরু করেছিলেন ব্যাট হাতে। কিন্তু পিঠের বিদ্রোহে নিজেই মাঠে নামতে ভরসা পাচ্ছেন না। কয়েক দিন আগে রোহিত আফসোস করে বলেছিলেন, যুবরাজ সিংহ অবসর নেওয়ার পর ব্যাটিং অর্ডারের চার নম্বর জায়গা নিয়ে সব থেকে বেশি চিন্তিত থাকেন তাঁরা। কারণ বেশ কয়েক জনকে চেষ্টা করা হলেও কেউই ভরসা দিতে পারেননি। শ্রেয়সকেও চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর চোট প্রবণতা সমস্যা আরও বৃদ্ধি করছে।
এশিয়া কাপের দু’টি ম্যাচ খেললেও পরীক্ষিত নন ব্যাটার শ্রেয়স। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ১৪ রান। নেপালের বিরুদ্ধে ব্যাট করার সুযোগ পাননি। তা হলে কি ফর্মে নেই শ্রেয়স? প্রতিযোগিতামূলক কোনও ম্যাচে তাঁকে না দেখেই দলে নেওয়া হয়েছে শুধু জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির ফিটনেস রিপোর্ট এবং অতীত রেকর্ডের উপর ভিত্তি করে। জাতীয় নির্বাচকদের এই সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। তিনি নিজের চোট নিয়ে কতটা যত্নবান তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।
চোটপ্রবণ শ্রেয়স ক্রমশ ভারতীয় দলের বোঝা হয়ে উঠছেন। হয় দলে থাকতে পারছেন না, থাকলে খেলতে পারছেন না। খেললে রান পাচ্ছেন না। আধুনিক পেশাদার ক্রিকেটে এমন সফরসঙ্গীকে রোহিতেরা কত দিন বইবেন? শুধু প্রতিভা দিয়ে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কি টিঁকে থাকতে পারবেন শ্রেয়স? ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ ভরসা হারাতে শুরু করেছেন।