বল হাতে বিধ্বংসী ভুবনেশ্বরকে অভিনন্দন সতীর্থদের। ছবি: পিটিআই
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপের নিয়ম রক্ষার ম্যাচ খেলতে নেমে ছিল ভারতীয় দল। জিতলেও ফাইনালে খেলার সুযোগ নেই, মাঠে নামার আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। তাই বৃহস্পতিবার মাঠেই নামলেন না অধিনায়ক রোহিত শর্মা। বিশ্রাম দেওয়া হল হার্দিক পাণ্ড্য, যুজবেন্দ্র চহালকে। ভারতকে নেতৃত্ব দিলেন লোকেশ রাহুল। ভারতের ২ উইকেটে ২১২ রানের জবাবে আফগানরা শেষ পর্যন্ত করল ৮ উইকেটে ১১১ রান। ১০১ রানে জয় দিয়ে এশিয়া কাপ অভিযান এ বারের মতো শেষ করল ভারত।
পাকিস্তানকে প্রায় হারের দরজা দেখিয়ে দেওয়া আফগানিস্তানকে কি হালকা ভাবে নিয়েছিল ভারতীয় দল? না কি নেহাতই নিয়মরক্ষার ম্যাচ বলেই গুরুত্ব দিতে চায়নি। কারণ যাই হোক, চেনা ছন্দে দেখা গেল ভারতীয় দলকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচের পর আফগানদের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে। ভারতীয় দলকে চেনা ছন্দে দেখা গেল মূলত দু’টি কারণে। প্রথমত বেশ কিছু দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট রান পেলেন রাহুল। দ্বিতীয়ত এবং প্রধান কারণ, ১০২০ দিন পর শতরান এল কোহলীর ব্যাট থেকে।
রোহিত না খেলায় মহম্মদ নবিদের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমেছিলেন রাহুল এবং কোহলী। শুরুতে বেশি আগ্রাসী ছিলেন রাহুলই। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৪১ বলে ৬২ রানের ইনিংস। মারলেন ছয়টি বাউন্ডারি এবং দু’টি ওভার বাউন্ডারি। রাহুল যে মেজাজে শেষ করলেন, সেই মেজাজেই শুরু করলেন কোহলী। শুরুতে একটা সুযোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক। কিন্তু এক বার জীবন পাওয়ার পর আর থামানো যায়নি তাঁকে। ৬১ বলে ১২২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন তিনি। কোহলী আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শতরান করলেন ১০২০ দিন পর। মারলেন ১২টি চার এবং ২টি ছয়। মূলত তাঁদের ব্যাটে ভর করেই ভারতের ইনিংস থামল ২ উইকেটে ২১২ রানে। এমন আবহে রাহুল আউট হওয়ার পর উইকেটে এসে প্রথম বলেই ছয় মারলেন সূর্যকুমার যাদব। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই তিনি আউট হয়ে গেলেন। শেষ পর্যন্ত কোহলীর সঙ্গে ২২ গজে ছিলেন ঋষভ পন্থ। তিনটি চারের সাহায্যে ১৬ বলে ২০ রান করলেন তিনি।
জয়ের জন্য ২১৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়লেন আফগানরা। প্রথম ওভারেই ভুবনেশ্বর কুমার ফিরিয়ে দেন দুই ওপেনার হজরতুল্লাহ জাজাই এবং রহমানুল্লাহ গুরবাজকে। মাত্র ৯ রানেই ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর নবিদের আর জয়ের আশা ছিল না। তেমন অঘটন ঘটেওনি। ইব্রাহিম জারদান ছাড়া আফগানিস্তানের প্রথম সারির কোনও ব্যাটারই দুই অঙ্কের রান পেলেন না। তাঁকে বাদ দিলে আফগানিস্তানের প্রথম ছয় জন ব্যাটারের মিলিত অবদান ১০ রান। শেষ পর্যন্ত জারদানের ব্যাট থেকে এল ৫৯ বলে ৬৪ রান। শেষ দিকে তাঁকে কিছুটা সঙ্গ দিলেন রশিদ খান এবং মুজিব উর রহমান। রশিদ করলেন ১৯ বলে ১৫। মুজিবের ব্যাট থেকে এল ১৩ বলে ১৮ রান। তাঁদের জন্যই আফগানিস্তানের ইনিংস পৌঁছাল মুখরক্ষা করার মতো জায়গায়। শেষ ওভারে বল করলেন দীনেশ কার্তিক। সেই সুযোগে ১০০ রান পার করল আফগান ইনিংস।
টি-টোয়ন্টি ক্রিকেটে জীবনের সেরা বোলিং করলেন ভুবনেশ্বর। চার ওভার বল করে মাত্র ৪ রান খরচ করে ৫ উইকেট নিলেন। ভাল বোলিং করলেন অর্শদীপ সিংহ, দীপক হুডারাও।