শতরানের পর কোহলীর মুখে হাসি। ছবি পিটিআই
দীর্ঘ ১০২০ দিন পর শতরান! দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বিরাট কোহলীর যেন শাপমুক্তি হল। কবে তিনি শতরান পাবেন, তাই নিয়ে কত অপেক্ষা, কত দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে ছিল। সেই খরা কাটল। কীর্তির দিনেও ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক অভিমানী। পাকিস্তান ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে জানিয়ে ছিলেন, টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ছাড়া কেউ তাঁকে বার্তা পাঠাননি। ৭১তম শতরানের দিনেও কোনও কোচ বা সতীর্থের নাম শোনা গেল না তাঁর মুখে। বার বার ঘুরেফিরে সেখানে এল স্ত্রী অনুষ্কা শর্মা এবং মেয়ে ভামিকার নাম।
সঞ্চালকের প্রশ্নে প্রথমেই কোহলী বললেন, “খুব ভাল লাগছে। আমি আপ্লুত। গত আড়াই বছর ধরে অনেক কিছু শিখেছি। নভেম্বরে আমার ৩৪ বছর হবে। এখন আগের মতো ও ভাবে উচ্ছ্বাস করতে পারি না। শতরানের পরে আমি একটু অবাকও। কারণ এই ফরম্যাট থেকে যে আমি শতরান পেতে পারি, সেটা ভাবনার বাইরে ছিল। ঈশ্বরের আশীর্বাদেই এটা সম্ভব হয়েছে। কঠোর পরিশ্রম করেছি। এই মুহূর্ত শুধু আমি নয়, গোটা দলের কাছেই বিশেষ আবেগের।”
এর পরেই পরিবারকে ধন্যবাদ দেওয়া শুরু করলেন কোহলী। শতরানের পর মাথার মধ্যে কী চলছিল, সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, “অনেক কিছু চলছিল। দলে ফেরার সময় প্রত্যেকে স্বাগত জানিয়েছিল এবং আমি যে ভাবে খেলতে চাই, সে ভাবেই খেলতে বলেছিল। বাইরে থেকে অনেকে অনেক কথাই বলছিল। আমরা পাত্তা দিইনি। শতরানের পর আংটিতে চুমু খেলাম। কারণ, আমার ফিরে আসা এবং সব সময় পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি অবদান এক জন মানুষেরই রয়েছে। সে আমার স্ত্রী অনুষ্কা শর্মা। এই শতরান সবার আগে ওকে এবং আমাদের মেয়ে ভামিকাকে উৎসর্গ করছি।”
The milestone we'd all been waiting for and here it is!
— BCCI (@BCCI) September 8, 2022
71st International Century for @imVkohli 🔥💥#AsiaCup2022 #INDvAFGpic.twitter.com/hnjA953zg9
কঠিন সময়ে অনুষ্কার সঙ্গে কথা বলেই যে তাঁর মানসিক সমস্যা অনেকটা মিটেছে, সেটাও উঠে এল কোহলীর কথায়। বলেছেন, “জীবনের কঠিন সময়ে কোনও মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বললে গোটা বিষয়টি খুব সহজ হয়ে যায়। আমার ক্ষেত্রে সেই কাজটা করেছে অনুষ্কা। কঠিন সময়ে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। খেলা থেকে দূরে থাকার সময় অনেক কিছু শিখেছি। দলে ফেরার পর এমন নয় যে কাঁড়ি কাঁড়ি রান করব ভেবে এসেছিলাম। কত দিন শতরান পাইনি সে সবও মাথায় ছিল না। শুধু ভেবেছিলাম, এই খেলা থেকে কত কী পেয়েছি! এটাই আমার মনকে শান্ত করে তুলেছিল। তরতাজা হয়ে নেমেছিলাম। খেলা থেকে বিরতি নেওয়ার পরেই বুঝেছিলাম, শারীরিক এবং মানসিক ভাবে কতটা ক্লান্ত ছিলাম। খেলায় এত প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে যে, সেটা নিয়ে ভাবার সময় থাকে না। আমার পক্ষে বিরতি নেওয়া শাপে বর হয়েছে। তার পরে যখন খেলা শুরু করলাম, তখনই বুঝতে পারলাম ছন্দ ফিরে পাচ্ছি। ক্রিজে নেমে সেটা কাজে লাগানোই দরকার ছিল।”