Twinkle Khanna on Zomato

ভোটের হাওয়ায় ‘রং’ বদল জ়োম্যাটোর, শ্রেণিবৈষম্যের ইঙ্গিত রয়েছে কি? প্রশ্ন টুইঙ্কলের

টুইঙ্কল খন্নার মতে, ‘পিয়োর ভেজ মোড’ (সম্পূর্ণ নিরামিষ) এই শব্দবন্ধের মধ্যে জাতপাত, শ্রেণিবৈষম্য এবং অস্পৃশ্যতার ইঙ্গিত রয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৫৩
Twinkle Khanna

অভিনেত্রী টুইঙ্কল খন্না। ছবি: সংগৃহীত।

একনিষ্ঠ নিরামিষভোজীদের কথা ভেবে এখন থেকে বাড়িতে একশো শতাংশ নিরামিষ খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে জ়োম্যাটো। যাকে বলা হচ্ছে ‘পিয়োর ভেজ ফ্লিট’। এই ব্যবস্থায় এমনকি যে সব হেঁশেলে আমিষ ও নিরামিষ, দু’রকম খাবারই বানানো হয়, এমন রেস্তরাঁরও চৌকাঠে পা রাখবে না নতুন সবুজরঙা বাক্সটি। সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছেন বাড়িতে খাবার পৌঁছনোর এই অনলাইন সংস্থার সিইও দীপিন্দর গয়াল। কিন্তু, জ়োম্যাটোর এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করলেন বলিউড অভিনেত্রী তথা লেখিকা টুইঙ্কল খন্না। তাঁর বক্তব্য, 'পিয়োর ভেজ মোড' (সম্পূর্ণ নিরামিষ) এই শব্দবন্ধের মধ্যে জাতপাত, শ্রেণিবৈষম্য এবং অস্পৃশ্যতার ইঙ্গিত রয়েছে।

Advertisement

এক্স হ্যান্ডলে গয়াল লিখেছিলেন, ‘‘শতাংশের নিরিখে নিরামিষাশীর সংখ্যা ভারতেই সবচেয়ে বেশি। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ মতামতের ভিত্তিতে দেখেছি, খাবার কী ভাবে তৈরি হচ্ছে, কী ভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সে সব বিষয়ে তাঁরা প্রচণ্ড খুঁতখুঁতে। যাঁরা একশো শতাংশ নিরামিষ খাবার চান, তাঁদের জন্য চালু হচ্ছে জ়োম্যাটোর একটি সম্পূর্ণ নিরামিষ পন্থা (পিয়োর ভেজ মোড) এবং নিরামিষ খাবার দেওয়ার জন্য আলাদা কর্মীর দল (পিয়োর ভেজ ফ্লিট)।’’ অনেকে মোগলাই খানার রেস্তরাঁ থেকেও নিরামিষ ডাল মাখানি বা জনপ্রিয় পিৎজ়া চেন থেকে ভেজ পিৎজ়া অর্ডার করেন। গয়াল জানান, জ়োম্যাটোর পিয়োর ভেজ মোডে শুধু মাত্র বাছাই করা সেই সব রেস্তরাঁরই নাম দেখাবে, যেখানে আমিষের কোনও নামগন্ধ নেই। সেখান থেকে খাবার যাঁরা নিয়ে যাবেন, সেই পিয়োর ভেজ ফ্লিটের কর্মীদের পোশাক এবং বাক্স হবে সবুজ রঙের। সিইওর কথায়, ‘‘আমাদের পিয়োর ভেজ ফ্লিট শুধু মাত্র এই সব পিয়োর ভেজ রেস্তরাঁ থেকেই অর্ডার নিয়ে যাবে। অর্থাৎ, কোনও মতেই কোনও নন-ভেজ খাবার, তা সে নন-ভেজ রেস্তরাঁর নিরামিষ খাবার হলেও এই সবুজ বাক্সে ঢুকবে না।’’

নতুন ব্যবস্থা চালু করা নিয়ে জ়োম্যাটো যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, সেখানে ভাষার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন টুইঙ্কল। তিনি বলেছেন, উপর উপর মনে হতে পারে, যাঁরা নিরামিষ খাবার খান, শুধু তাঁদের কথা ভেবেই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। কিন্তু একটু খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, এর মধ্যে জাতপাত, শ্রেণি এবং অস্পৃশ্যতার ইঙ্গিত রয়েছে।

প্রসঙ্গত ভোটের মুখে জ়োম্যাটোর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছে। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার এর মধ্যে এক ধরনের রাজনীতিই দেখছেন। তিনি বলছেন, ‘‘একনিষ্ঠ নিরমিষভোজী ভারতে বড়জোর ২৫-৩০ শতাংশ। সেটাও মূলত উত্তর ভারতে। কিন্তু দেশের রাষ্ট্রযন্ত্র তাঁদেরই খাঁটি হিন্দুত্ব বা ভারতীয়ত্বের সঙ্গে মিলিয়ে দিচ্ছে। জ়োম্যাটোর এই উদ্যোগকে খানিকটা সরকারি নীতির সঙ্গে তাল মেলানোই বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement