স্কুলের হোমওয়ার্ক করার সঠিক সময় কী? ফাইল চিত্র।
ঘড়ি ধরে পড়তে বসায় কারই বা আগ্রহ থাকে? তবে খুদে দুষ্টুমি করুক বা বায়না, তাদের পড়তে বসাতে হবেই। বিশেষ করে স্কুলের পড়া নিয়ম মেনেই করাতে হবে। কিন্তু তা বলে বকাঝকা করাটা সমস্যার সমাধান নয়। বরং বাবা-মায়ের উৎসাহেই শিশুর পড়াশোনায় আগ্রহ তৈরি হতে পারে। আর সময় ধরে পড়তে বসালে, পড়াও ভাল হবে এবং সেই পড়া মনেও থাকবে শিশুর।
মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মতে, পড়াশোনার নির্দিষ্ট রুটিন থাকা জরুরি। অর্থাৎ কোন সময়ে শিশুকে পড়তে বসাতে হবে তার একটা রুটিন মেনে চললে পড়াশোনায় আগ্রহ তৈরি হবে। পড়াশোনা, খেলাধুলা, শরীরচর্চা— সব কিছুর জন্যই সময় ভাগ করে নিতে হবে। অনিন্দিতার কথায়, খুদে সন্ধ্যা থেকে টিভি দেখে, এ দিক-ও দিক ঘুরে বেশি রাতে পড়তে বসলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই তার পড়াশোনায় মন থাকবে না। আবার খুব ভোরে জোর করে ঘুম থেকে তুলে পড়া মুখস্থ করতে দিলে, শিশু পড়তে বসতেই চাইবে না। তাই সময় মেনে চলা খুব জরুরি।
হোমওয়ার্ক করার সঠিক সময় কোনটা?
১) স্কুল থেকে ফিরেই যদি ঝটপট হোমওয়ার্ক সেরে নিতে পারে, তা হলে ভাল হয়। মনোবিদের পরামর্শ, স্কুলে যা পড়ানো হচ্ছে তা মনে থাকতে থাকতেই গৃহপাঠ শেষ করে নিতে হবে। এতে পড়াও মনে থাকবে আর ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে না।
২) স্কুল থেকে ফিরে অনেক শিশুই পড়তে বসতে চায় না। সে ক্ষেত্রে এক ঘণ্টা খেলার সময় দিতে হবে। তবে ঘরে বসে মোবাইলে গেম নয়, বাইরে বেরিয়ে খেলাধুলা করা বা শরীরচর্চা করা ভাল। এতে চঞ্চলতা কমবে, মনও স্থির হবে। খেলাধুলার পরে শিশুকে এমন খাবার দিতে হবে যা স্বাস্থ্যকর ও শক্তিবর্ধক। এর পরে পড়তে বসালে শিশু সম্পূর্ণ মনঃসংযোগ করতে পারবে।
৩) সকালে ঘুম থেকে তুলেই পড়তে বসাবেন না শিশুকে। অন্তত ৩০-৪০ মিনিট সময় দিতে হবে। এই সময়ের মধ্যে শিশু যদি শরীরচর্চা করে বা যোগাসন করে তা হলে খুব ভাল। এর পরে পড়তে বসালে, সেই পড়া ভাল হবে। দ্রুত পড়া মুখস্থও হবে।
৪) খুদের স্কুল যদি দুপুর অবধি হয়, তা হলে বাড়ি ফিরে বিশ্রাম নিয়ে বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে পড়তে বসানো ভাল। ওই সময়ে পড়াশোনা ভাল হয়। শিশু যত বেশি আলসেমি করবে ও সন্ধ্যা করে পড়তে বসবে ততই অমনোযোগী হয়ে উঠবে।
৫) দুপুরে ভারী খাবার খেয়ে বা রাতে খাওয়ার পরে পড়তে না বসানোই ভাল। ওই সময়টাতে আলস্য বাড়ে। বরং তাড়াতাড়ি পড়া শেষ করে ওই সময়ে মেডিটেশন বা ধ্যান করালে, শিশুর মনের অস্থিরতা কমবে।