গরমে বাচ্চাদের শান্ত রাখার টোটকা। ছবি: সংগৃহীত।
স্কুলে গরমের ছুটি সেই অর্থে পড়েনি। কিন্তু গরমের দাপট বাড়তে থাকায় পড়ুয়াদের বাড়ি থেকে অনলাইনে পড়াশোনার কাজ করতে হচ্ছে। তা নিয়ে সকাল থেকে বাবা-মায়ের ব্যস্ততা চরমে। তার উপর দফায় দফায় চলে লোডশেডিং। স্কুলের সময়টুকু পার করে ফেলতে পারলেও সারা দিন বাচ্চাকে শান্ত রাখতে গিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়। বাড়ির সামনেই বড় মাঠ রয়েছে। বিকেলে যে একটু খেলতে পাঠাবেন, তার উপায় নেই। সুয্যিমামা পাটে গেলেও গনগনে তাপ তখনও থাকে।
কোনও কাজ ছাড়া বাচ্চাদের এক জায়গায় বসিয়ে রাখা সমস্যার। তার উপর যদি খুদেটি হাতে-পায়ে দুরন্ত হয়, তা হলে তো কথাই নেই। গরমে বাড়ির বাইরে কোথাও পাঠানোর উপায় নেই। আর তাদের বাড়িতে থাকা মানেই সারা ক্ষণ হয় টিভি, না হয় ফোন। এ দিকে বাচ্চাদেরও ঘরের মধ্যে থাকলেও সারাটা সময় বই পড়তে কিংবা ছবি আঁকতে ইচ্ছে করে না। তবে? এ সবের বাইরেও এমন কয়েকটি কাজ ছোটদের করতে দেওয়া যেতে পারে যেগুলি সহজে বাড়িতে বসেই করা যায়। পাশাপাশি তাঁদের মানসিক বিকাশেও প্রভূত সাহায্য হয়।
কোন কোন কাজ তাঁদের দিয়ে করাতে পারেন?
১. পছন্দের কার্টুন চরিত্রদের দিয়ে তৈরি পাজ়ল সাজাতে দিন। ছোট ছোট টুকরো জুড়ে জুড়ে তৈরি হয় গোটা একটি চিত্র। পাজ়ল কিন্তু অনেক প্রকারের হয়। তার বিভিন্ন স্তরও থাকে। যা বাচ্চাদের মানসিক বিকাশেও সাহায্য করে।
২. ছোট্ট, চার কোণা আঁকার খাতায় সব সময়ে তাদের আঁকতে ইচ্ছে করে না। ঘরের দেওয়াল জুড়ে আঁকিবুকি কাটতে তারা বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করে। ওদের এমন কাজে বাধা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং বাড়ির ছোট্টটির ঘরের একটি দেওয়াল জুড়ে সাদা ক্যানভাস টাঙিয়ে রাখুন। মনের সুখে সেখানে রঙ বুলোতে দিন।
৩. মায়েরা হেঁশেলে গেলেই তাঁদের পিছু নেয় খুদেরা। গরমে তাদের কষ্ট হবে ভেবে আটকে লাভ নেই। বরং রান্নাঘরে এক কোণে বসিয়ে রেখে ছোট ছোট কাজের মধ্যে যুক্ত রাখুন। অনেক সমস্যার সমাধান হবে তাতে।
৪. গল্পের বই পড়তে ভাল না লাগলে, তা শোনার ব্যবস্থা করতে পারেন। এখন ইউটিউবে নানা ভাষায়, নানা ধরনের অডিয়ো বইয়ে পাওয়া যায় এমন গল্প। দিন শুনতে। হাতে-পায়ে দুরন্ত বাচ্চাদের শান্ত করতে এই টোটকা দারুণ কাজের। এই ধরনের অডিয়ো বই ওদের মানসিক ভাবেও উন্নত করবে।
৫. বিকেলে বাইরে খেলতে পাঠাতে না পারলেও প্রকৃতির সঙ্গে থাকতে শেখান। বারান্দায় রাখা গাছের পরিচর্যা করলেও কিন্তু মন ভাল হয়। খুদের পাশে থেকে কী ভাবে গাছের যত্ন নিতে হয়, সেই পাঠও দিতে পারেন। ছোট্ট একটা ঘটনা বলি, দুনিয়ার প্রবাদপ্রতিম ক্রিকেটার সুনীল গাওস্করের মা, তাঁর ক্রিকেটপ্রেমী ছেলেকে সঙ্গ দিতে বারান্দায় ক্রিকেট খেলতেন। তাতে ছেলের জোরালো ‘শট’ এক বার মায়ের নাকে লেগে রক্তারক্তি হয়ে যায। তার পরের ঘটনা তো সকলের জানা। ফলে আজকের মা-বাবাদের বলব, নতুন করে ভাবুন ছেলেমেয়েদের মানুষ করা নিয়ে। ঠিক পারবেন। ভাল থাকবে ওরাও।