Glaucoma Treatment

গ্লকোমার চিকিৎসায় নয়া দিশা, দৃষ্টি হারানোর ঝুঁকি কমাতে ‘আই ড্রপ’ এল দেশে

গ্লকোমা কী ভাবে নির্মূল করা যাবে, তা নিয়ে গবেষণা চলছে দীর্ঘ সময় ধরেই। সম্প্রতি নতুন একটি আই ড্রপ এসেছে দেশে, যা তৈরি হয়েছে দু’টি ওষুধের সংমিশ্রণে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:২১
New eye drops for glaucoma treatment has been launched in India

গ্লকোমা সারাতে কী ওষুধ এল? ছবি: ফ্রিপিক।

মধ্য চল্লিশে চোখের আচমকা ঝাপসা হতে শুরু করলে অনেকেই ভাবেন ক্লান্তির কারণে হচ্ছে। বাড়ির প্রবীণ মানুষটি যদি আশপাশের দৃশ্য ঠিকমতো দেখতে না পান, তা হলে ছানি ভেবে নেন অনেক ক্ষেত্রেই। দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে এলে তখন চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে ধরা পড়ে কারণটা ছানি নয়, গ্লকোমা। চোখের এই অসুখের নাম শুনলেই আতঙ্ক শুরু হয়। গ্লকোমা এমন এক রোগ, যা এক বার চোখে হানা দিলে দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিয়ে তবেই থামে। গ্লকোমা কী ভাবে নির্মূল করা যাবে, সে নিয়ে গবেষণা চলছে দীর্ঘ সময় ধরেই। সম্প্রতি নতুন একটি আই ড্রপ এসেছে দেশে। দু’টি ওষুধের মিশেলে তৈরি এই আই ড্রপ অন্ধত্বের ঝুঁকি কমাতে পারবে বলেই দাবি।

Advertisement

রিপাসুডিল ও টিমোলল নামে দু’টি ওষুধের সংমিশ্রণে তৈরি আই ড্রপটি মূলত ‘কম্বিনেশন ড্রাগ’। এই ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছিল এত দিন। খবর, কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থা ওষুধটিকে ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে।

চোখের যে অংশ দিয়ে ফ্লুইড বা তরল প্রবাহিত হয়, সেই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে তা কোনও একটি স্থানে জমতে শুরু করে। এর ফলে চোখের অপটিক নার্ভে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। যাকে ‘ইন্ট্রাঅকুলার প্রেশার’ বলা হয়। চাপ বাড়তে থাকলে দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ ক্ষীণ হতে থাকে। যা পরবর্তী কালে অন্ধত্বের কারণ হয়ে ওঠে। গ্লকোমায় আক্রান্ত হলে একেবারে শুরুর দিকে রোগীর ‘সাইড ভিশন’, অর্থাৎ পাশের জিনিস দেখার ক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। এটাই হল লক্ষণ।

গ্লকোমায় হারানো দৃষ্টি চিকিৎসা করেও ফেরানো যায় না। এই রোগ গোড়ায় ধরা পড়লে চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণ করেই দৃষ্টি ঠিক রাখার চেষ্টা করেন চিকিৎসকেরা। নতুন আই ড্রপটিও সে কাজই করবে বলে দাবি করা হয়েছে। রিপাসুডিলের কাজ হবে চোখের অতিরিক্ত ‘ফ্লুইড’ বার করে দিয়ে চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং টিমোললের কাজ হবে চোখে নতুন করে জল জমতে না দেওয়া। গ্লকোমা আক্রান্তদের উপরে ওষুধটির প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

২০২০ সালের পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে আট কোটি মানুষ গ্লকোমার শিকার। বর্তমানে সেই সংখ্যা ১০ কোটি ছুঁয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দেশে চল্লিশোর্ধ্বদের মধ্যে গ্লকোমায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ১২ লক্ষেরও বেশি। দৃষ্টিহীনতার ফলে কর্মক্ষমতা হারাচ্ছেন বহু পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্যেরাও। গ্লকোমার ঝুঁকি কমাতে তাই বছরে অন্তত দু’বার চক্ষু পরীক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। সামান্য লক্ষণ দেখা দিলেও দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement
আরও পড়ুন