ব্রিটেনের কিছু ক্লিনিকে ছেলেরাও এখন শুক্রাণু সংরক্ষণ করছেন। ছবি: শাটারস্টক
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েদের মা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। ডিম্বাণুর মানও পড়ে যায়। কিন্তু কেরিয়ারের চাপে অনেক মেয়েই এখন খুব তাড়াতাড়ি মা হতে চান না। তাঁরা মাতৃত্বের স্বাদ থেকে বঞ্চিতও থাকতে চান না। বেশি বয়সে যাতে সন্তানধারণে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে এখন বহু মেয়ে তাঁদের ডিম্বাণু সংরক্ষণের পথে হাঁটেন। যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘এগ ফ্রিজিং বলা’ হয়। ডিম্বাণু মান যাতে না পড়ে যায়, সেই কারণেই এই ব্যবস্থা। ব্রিটেনে বহু ক্লিনিক এখন ছেলেদেরও তাঁদের শুক্রাণু সংরক্ষণের সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু ছেলেদের কি আদৌ সেই ব্যবস্থার প্রয়োজন আছে?
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ততটা নেই। কারণ ছেলেদের ক্ষেত্রে বয়সের সঙ্গে শুক্রাণুর অবনতি সে ভাবে হয় না। তাই যে কোনও বয়সেই ছেলেরা সহজেই বাবা হতে পারেন। তা হলে এই ব্যবস্থার কী প্রয়োজন, প্রশ্ন উঠছে।
শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ড্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক অ্যালান পেসির এ বিষয়ে মত, যাঁদের কোনও রকম জটিল রোগের চিকিৎসা চলছে, যেমন ক্যানসার, তাঁদের শুক্রাণুর মান ধীরে ধীরে পড়ে যেতে পারে চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে। তাঁদের জন্যে এই ধরনের ব্যবস্থা লাভজনক। তা ছা়ড়া যাঁরা এমন পেশায় রয়েছেন যেখানে জীবনের ঝুঁকি খুব বেশি (যেমন সেনা), তাঁরাও তাঁদের শুক্রাণু সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। কিন্তু তা ছাড়়া কমবয়সি ছেলেদের শুক্রাণু সংরক্ষণের সে ভাবে কোনও প্রয়োজন নেই।
তবে রূপান্তরকামীরা অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের শুক্রাণু সংরক্ষণ করতে চাইতে পারেন বলে মনে করেন মেডিক্যাল ডিরেক্টর মালিনী উপ্পাল। যাঁরা ভ্যাসেকটমি করার সিদ্ধান্ত নেন, তাঁদের পক্ষেও এই ব্যবস্থা সুবিধেজনক বলে মনে করেন তিনি।
মিক জ্যাগার, চার্লি চ্যাপলিনের মতো বহু খ্যাতনামী অনেক বেশি বয়সে (দু’জনেরই বয়স ছিল ৭৩) বাবা হয়েছেন। ছেলেরা যে আজীবন শুক্রণু উৎপাদন করেন, তা-ও সকলেরই জানা। বিজ্ঞান বলছে, বয়সের সঙ্গে খুব কম পুরুষেরই শুক্রাণুর মানে অবনতি ঘটে।