পোকামাকড় দিয়ে বানানো মুখরোচক ৫ পদ। ছবি: সংগৃহীত।
খাদ্যাভ্যাস বড়ই বিতর্কিত বিষয়। সমাজ, দেশ, রাজনীতি, অর্থনীতি— এ সবের উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে মানুষের খাবার বেছে নেওয়ার অভ্যাস। কিন্তু কোনটি খাদ্য, কোনটি নয়, এই তর্কের অবসান নেই। বাস্তুতন্ত্রের কথা মাথায় রাখলে পোকামাকড় কিন্তু প্রকৃতির খাদ্যচক্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
আমেরিকার মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ এডুকেশন, হেল্থ অ্যান্ড সোসাইটি সিড গ্রান্ট এবং আমেরিকার কৃষি বিভাগের একটি গবেষণায়, ভোজ্য পোকামাকড়কে পুষ্টিকর খাদ্য হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মানুষের খাদ্যতালিকায় গুবরে পোকা, শুঁয়োপোকা, মৌমাছি, বোলতা, লাল পিঁপড়ে, ফড়িং, ঝিঁঝিপোকা, উইপোকা, মাছির মতো পোকামাকড়ের পদ বেশি জনপ্রিয়।
এমনই কিছু পোকামাকড়ের পদের কথা এখানে উল্লেখ করা হল—
লাল পিঁপড়ের চাটনি: টক-ঝাল এই চাটনি অনেকের কাছেই বেশ মুখরোচক। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলা, অর্থাৎ আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় এই পদের জনপ্রিয়তা বেশি। লাল পিঁপড়ে বেটে এই চাটনি বানানো হয়। দাবি, এই চাটনিতে প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিঙ্কের মতো নানা ধরনের উপাদান রয়েছে।
জিং লিড: তাইল্যান্ডের বিখ্যাত খাবার। আসলে এটি ঝিঁঝিপোকা ভাজা। সে দেশের স্ট্রিট ফুডের তালিকায় স্থান পেয়েছে জিং লিড। মরিচ এবং সস্ দিয়ে পরিবেশন করা হয়।
এরি পোলু: অসম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকটি এলাকায় এরি পোলু খাওয়ার চল রয়েছে। রেশমগুটি পোকা দিয়ে বানানো এই পদ ভাতের সঙ্গে মেখে খেতেই ভালবাসেন এলাকার বাসিন্দারা।
চাপুলাইন: মেক্সিকোর বিখ্যাত খাবার চাপুলাইন বানানো হয় ফড়িং দিয়ে। অনেকেই চিংড়ির স্বাদের সঙ্গে মিল পান এই পোকার। এটি নাকি প্রোটিনের উৎস। এটিও সস্ এবং সুরার সঙ্গে ভাজা করে খাওয়া হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত খাবার রেশমপোকার পিউপা সিদ্ধ। ছবি: সংগৃহীত।
বিওনডেগি: কিমবাপ, কিমচির মতো খাবার তো ইতিমধ্যেই ভারতের শহরে শহরে রেস্তরাঁগুলিতে ভারী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্পষ্টই, দক্ষিণ কোরিয়ার নামজাদা পদগুলি কেবল সারা বিশ্বে জায়গা করে নিয়েছে। তবে বিওনডেগিও সে দেশের জনজাতির কাছে বেশ পছন্দের পদ। রেশমপোকার পিউপাকে সিদ্ধ করে নুন দিয়ে শুধুও খাওয়া যায়, অথবা সোজ়ুর (সুরা) সঙ্গেও খান অনেকে। সে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুড এটি।