খুদে সদস্যের পড়ার ঘর কী ভাবে সাজাবেন? ছবি: সংগৃহীত।
বাবা-মায়ের হাত ধরেই যেমন পথ চলতে শেখে সন্তান, তেমন অভিভাবকেরাও খুদেকে ঘিরেই তাঁদের স্বপ্ন সাজান। সন্তানের বড় হওয়া, পড়াশোনা, কোথাও যেন এতটুকু খামতি না থাকে, সব সময় ভাবেন বাবা-মা। ছেলে বা মেয়ে যেন সামান্যতম কষ্ট না পায়, যাতে সব সময় হাসিখুশি থাকে, সেই চেষ্টা করেন।
সেই চেষ্টার অঙ্গ খুদের ঘর সাজানো। পড়ার জায়গা এমন ভাবে গুছিয়ে দেওয়া, যাতে ছোট্ট সদস্যটি খুশি হয়। কিন্তু কী ভাবে সাজাবেন সন্তানের পড়ার ঘর? কী ভাবে সাজালে খুদের মুখেও হাসি ফুটবে?
১. প্রথমেই নজর দেওয়া দরকার ঘরের মেঝে ও রঙের দিকে। খুব বেশি রংচঙে হলেই যে তা আকর্ষণীয় হবে, তা নয়। বরং এমন রং পছন্দ করুন, যা চোখের পক্ষে আরামদায়ক। সব সময় কন্যাসন্তান হলেই গোলাপি বেছে নিতে হবে, তার কোনও মানে নেই। এমন রং ব্যবহার করুন যাতে ঘরটি আলোকোজ্জ্বল লাগে। পাশাপাশি, মেঝের দিকটাও খেয়াল রাখুন। বেশি জবরজং নকশা নয়, অথচ যেন সুন্দর হয়।
২. বই রাখার জন্য দেওয়ালটা সুন্দর ভাবে ব্যবহার করতে পারেন। বড় দেওয়াল থাকলে সেখানে তাক রাখতে পারেন। দেওয়ালের মাঝে জানলা থাকলে, সেই জানলার দু’পাশে কাঠ বা প্লাইউডের তাক বানিয়ে দিন। যার এক পাশে বইপত্র থাকবে, অন্য পাশে খেলনা গুছিয়ে রাখা যাবে।
৩. দেওয়ালে রাখতে পারেন মনীষীদের ছবি, অনুপ্রেরণামূলক উক্তি। পড়াশোনার বিষয়গুলিও ছবির মাধ্যমে দেওয়ালে সাজিয়ে দিতে পারেন। প়ড়ার টেবিলের ঠিক উপরেই একটি ব়ড় বোর্ড রাখতে পারেন। যেখানে শিক্ষণীয় বিষয়গুলি নির্দিষ্ট সময় অন্তর বদলে দেওয়া যায়। যেমন ধরুন, খুদে যখন এবিসিডি শিখছে, তখন তেমনই ছবি সেখানে সাঁটিয়ে রাখুন। এবিসিডি-র পাঠ থেকে এগোলে রং চেনার জন্য কোনও ছবি সেখানে লাগিয়ে দিন। এ ভাবেই চোখের সামনে প্রাণীদের নাম, কোনটা কোন গাড়ি, ছবি লাগিয়ে তাকে চেনাতে পারেন।
৪. শিশু খেলতে খেলতে পড়ে। খেলতে খেলতেই শেখে। তাই পড়ার ঘরে জিনিসপত্র ঠেসে না ঢুকিয়ে মেঝে যথাসম্ভব ফাঁকা রাখার চেষ্টা করা ভাল। প্রথমে সেখানে তার খেলার জিনিস রাখা যাবে। তার পর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাকে শিক্ষামূলক খেলনা এনে দিতে হবে। ছোটরা নিজের একটু জায়গা খুব পছন্দ করে। পড়ার ঘরের এক কোণে ছোট্ট একটা তাঁবু রেখে দিতে পারেন। যেখানে সে তার মতো করে খেলবে। বড় হলে, ঘরেই সৌরজগতের মডেল তৈরি করে দিতে পারেন। এমন অনেক মডেল তৈরি করা যায় খুদের পড়াশোনার জন্য।
৫. পড়ার বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের গল্পের বইয়ের সম্ভার রাখুন খুদের পড়ার ঘরের কোনও একটি তাকে। চোখের সামনে রঙিন বই দেখলে, সে আগ্রহী হবে। ইদানীং, অনেকেরই অভিযোগ, শিশুরা বই পড়ে না। বই পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা, পড়ার অভ্যাস তৈরি করাও অভিভাবকদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
৬. আলাদা করে পড়ার টেবিল না কিনে, জায়গা বাঁচাতে দেওয়াল জুড়ে লম্বা টেবিল তৈরি করে দিতে পারেন। তাতে ড্রয়ার থাকবে। নীচের অংশে বই বা অন্য জিনিসপত্র রাখার জায়গা। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খুদের প্রয়োজন বদলাবে। তখন ট্যাব, ল্যাপটপেরও দরকার হবে। তাই শুরু থেকেই পড়ার ঘর এমন ভাবে তৈরি করুন, যাতে বড় হলেও সেই ঘর সে স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারে।
৭. যদি আলাদা করে শিশুর শোওয়ার ঘর না থাকে, তা হলে পড়ার ঘরের এক পাশেই তার খাটের ব্যবস্থা করতে পারেন। খাট না কিনে, মেঝেতে বিছানা পেতে রাখতে পারেন, যেখানে বসে সে খেলবে। আবার চাইলে ঘুমিয়েও নিতে পারবে।