জিমে গিয়ে কোন কোন নিয়ম মেনে চলতেই হবে। ছবি: ফ্রিপিক।
শরীরচর্চার জন্য জিমে যাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু সেখানে গিয়েও সঠিক আচরণই করতে হবে। ঠিক যেমন কর্মক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আদবকায়দা মেনে চলতে হয়, জিমের ক্ষেত্রেও বিষয়টি তেমনই। অনেকেই ভাবেন, যেমন খুশি পোশাক পরেই জিমে চলে যাওয়া যাবে, সেখানে গিয়ে উচ্চস্বরে কথা বলতে বলতে বা গল্প করতে করতে শরীরচর্চা করা যাবে, এই অভ্যাস কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। আপনার কিছু আচরণ অন্যের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। তা ছাড়া শরীরচর্চা করার সময়েও অনেক রকম ভুল হয়। সেগুলি কী কী জেনে নিন।
১) প্রতিটি জিমেরই কিছু নির্দিষ্ট নিয়মকানুন আছে। সেগুলি মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে। যেমন জিমের পোশাক। খুব খোলামেলা পোশাক যেমন বাকিদের বিব্রত করতে পারে, তেমনই খুব আঁটসাঁট পোশাকও জিমের জন্য সঠিক নয়। আপনার জন্য যে পোশাক বলে দেবেন প্রশিক্ষক, তেমনই মেনে চলার চেষ্টা করুন।
২) জিম গল্প-আড্ডার জায়গা নয়। চেনা পরিচিত লোকজনের সঙ্গে দেখা হলে কথা বলুন কিন্তু উচ্চস্বরে গল্প, ব্যক্তিগত আলোচনা, হাসাহাসি অন্যের বিরক্তির কারণ হতে পারে। অযথা চিৎকার-চেঁচামেচিও কাম্য নয়।
৩) অনেকেই ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতে ফোনে কথা বলেন অথবা ভিডিয়ো চালিয়ে রাখেন। জরুরি ফোন তোলা যেতেই পারে, কিন্তু শরীরচর্চার সময়ে ফোনে কথা বলা বা মোবাইলে ভিডিয়ো দেখে যাওয়া স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। তা ছাড়া আপনার চারপাশে যাঁরা ব্যায়াম করছেন, তাঁদের ভাল না লাগতেও পারে।
৪) জিমের ডাম্বল, ম্যাট বা যে সরঞ্জামই ব্যবহার করুন না কেন, তা নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিন। আপনার কাজ হয়ে গেল চারদিকে ছড়িয়ে রেখে যাবেন না।
৫) প্রশিক্ষকেরা বলেই দেন প্রত্যেককে তাঁদের নিজস্ব তোয়ালে নিয়ে আসতে। অন্যের তোয়ালে নিয়ে টানাটানি করা বা আপনার তোয়ালে যেখানে-সেখানে রেখে দেওয়া সঠিক আচরণ নয়। আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস নিজের ব্যাগেই রাখুন। জিমে যখন যাবেন নিজের ব্যাগ সবসময়ে নিয়ে যাবেন।
৬) জিমের প্রতিটি মেশিন ব্যবহার করার নির্দিষ্ট সময় আছে। আপনার ইচ্ছা হলেই বেশি ক্ষণ ট্রেড মিলে ছুটতে বা হাঁটতে পারবেন না। অন্যকেও সুযোগ দিতে হবে। কোন মেশিন কত ক্ষণ ব্যবহার করবেন তার সময় ভাগ করে নিন।
৭) ব্যায়ামের পাশাপাশি বিশ্রামও জরুরি। তাই বলে বিরতির সময়ে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করবেন না। প্রতি সেট ব্যায়ামের পর ১ মিনিট বিরতি নিয়ে আবারও শুরু করতে পারেন। বেশি সময় বিরতি নিলে পেশি, স্নায়ু ঝিমিয়ে পড়বে, ফলে পরের ব্যায়ামে আর উৎসাহ পাবেন না। ক্লান্ত লাগতে শুরু করবে।
৮) অবশ্যই সুগন্ধি বা ডিয়োডরেন্ট সঙ্গে নিয়ে যাবেন। আপনার ঘামের গন্ধ যেন অন্যের অস্বস্তির কারণ না হয়ে ওঠে।
৯) জিমে গিয়েই হুড়মুড়িয়ে কার্ডিয়ো বা ওজন তোলা শুরু করে দেবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। শুরুটা ‘ফ্রি-হ্যান্ড’, ‘স্ট্রেচিং’ দিয়ে হবে। আগে শরীরের পেশিগুলিকে চনমনে করে তুলতে হবে। হৃৎস্পন্দনের হারও সেই অনুযায়ী হবে। বিশ্রামের অবস্থা থেকে হঠাৎ করে ভারী ব্যায়াম শুরু করা যায় না। আগে শরীরকে মানিয়ে নিতে হবে। তার পর প্রশিক্ষক যেমন বলবেন সেই অনুযায়ী ব্যায়াম করুন।
১০) জিমের প্রশিক্ষককে সম্মান করা ও তাঁর কথা শুনে চলা খুব জরুরি। এখন ইন্টারনেটের দৌলতে অনেকেই বিভিন্ন রকম ব্যায়াম নিয়ে চর্চা করেন, ইউটিউবে ভিডিয়োও দেখেন। আপনি অনেক জানতেই পারেন, কিন্তু আপনার শরীরের জন্য কোন ব্যায়াম উপযুক্ত, তা প্রশিক্ষকই ঠিক করে দিতে পারবেন। তারকাদের জিম করার ভিডিয়ো দেখে বিভ্রান্ত হয়ে নিজের মতামত দেবেন না অথবা প্রশিক্ষককে অমান্য করবেন না। এতে আপনারই ক্ষতি।