Early Cancer Warning Signs

কোন ক্যানসারের কেমন লক্ষণ? শরীরের কোন পরিবর্তনে আগেভাগে সতর্ক হবেন, কী কী খেয়াল করবেন?

ক্যানসার একদিনে বাসা বাঁধে না। তলে তলে রোগ ডালমালা মেলতে থাকে। পাশাপাশি তার লক্ষণও প্রকাশ পেতে থাকে। অতি সাধারণ উপসর্গ হলেও খেয়াল করতে হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ ১৫:২৪
What are the early signs and symptoms of Cancer

ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলি জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।

ক্যানসার, এই একটি শব্দেই ঘুম উড়ে যায়! চিকিৎসা বিজ্ঞানের যতই উন্নতি হোক না কেন, ক্যানসার ধরা পড়েছে শুনলেই রোগীর মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়ে। মনে মনে এই ধারণাই তৈরি হয় যে, জীবনের শেষ দিন হয়তো উপস্থিত। চিকিৎসকেরা বলেন, ক্যানসার যদি তলে তলে বাসা বাঁধে, তা হলে তার কিছু লক্ষণ আগেই প্রকাশ পায়। আমরা না বুঝেই সে সব এড়িয়ে যাই বা মাথা ঘামাই না। যখন খেয়াল করি, অনেকটাই সময় পেরিয়ে যায়। রোগ যদি শেষবেলায় ধরা পড়ে, তা হলে আর কিছু করার থাকে না।

Advertisement

বেশির ভাগ ক্যানসারই ধরা পড়ে তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ে গিয়ে। কারণ রোগী তো বটেই, পরিবার-পরিজনেরাও রোগের লক্ষণ নিয়ে সচেতন নন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ক্যানসার মানেই হল, শরীরে কোনও কোষের বৃদ্ধি। তাই ক্যানসার সাধারণ হোক বা বিরল, সব ক্ষেত্রেই এই ‘গ্রোথ অব সেল’ হবেই। এ বার ক্যানসার যে অঙ্গে হচ্ছে সেই অনুযায়ী তার উপসর্গ প্রকাশ পাবে। যত সাধারণ লক্ষণই হোক, যদি তা দিনের পর দিন ধরে প্রকাশ পেতে থাকে তা হলে ফেলে না রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই হবে। ক্যানসার যদি গোড়ায় ধরা পড়ে, তা হলে আধুনিক চিকিৎসায় তা সেরে যেতে পারে। তাই জেনে নিন, শরীরে মারণ রোগ বাসা বাঁধলে তার কী কী উপসর্গ ফুটে উঠতে শুরু করবে।

কাশি সারতে চাইবে না, এর সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বা গলার স্বর বসে যাওয়া এবং কফের সঙ্গে রক্ত উঠে আসা, ফুসফুসের ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ। রোগী যদি ধূমপান করেন, জর্দা-সহ পান বা তামাক খান, তা হলে তো অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে।

আবার ধরুন, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা একটানা হয়েই চলেছে। মাইগ্রেনের ব্যথা বা সাইনাস ভেবে এড়িয়ে গেলেন। সকালে বমি হওয়া, সারা দিন বমি বমি ভাব, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, কানে কম শোনা, এ সবই যদি দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকে, তা হলে তা মস্তিষ্কের ক্যানসারের লক্ষণও হতে পারে।

যদি দেখেন, আচমকা ওজন কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ঢোঁক গিলতে কষ্ট কচ্ছে। খাওয়ার পরে বমি বা বমি বমি ভাব দেখা দিচ্ছে, খাদ্যনালিতে সংক্রমণ হচ্ছে, তা হলে তা পাকস্থলীর ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। মলের সঙ্গে রক্তপাত, দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য, মল ত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন ইত্যাদিও ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

বহু দিন হয়ে গেলেও ঘা সারছে না কিছুতেই? মুখের ভিতরে ঘা, যৌনাঙ্গে ঘা বা ক্ষত যদি না সারে, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ত্বকের তিল বা আঁচিলের দ্রুত আকার বৃদ্ধি, রং পরিবর্তন অথবা দগদগে ঘা। কেটে যাওয়া বা পুড়ে যাওয়া অংশ ফুলে উঠতে থাকলে, সেখানকার রঙ বদলাতে শুরু করলে, সতর্ক হতে হবে। হতেই পারে তা ত্বকের ক্যানসারের কারণ।

একটানা যদি সর্দি-কাশি লেগে থাকে, তা হলে সাবধান হতে হবে। সপ্তাহের পর সপ্তাহ বা মাসের পর মাস কেটে গেলেও হয়তো দেখবেন শুকনো কাশি সারছে না। তা হলে তা ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

মহিলারা অনের সময়েই খেয়াল করেন না যে, স্তনবৃন্তের আকার বা রঙে কোনও বদল আসছে কিনা। স্তনবৃন্তের পাশে মাংসপিণ্ড, স্তনবৃন্ত দিয়ে রক্তপাত, স্তনের আকার বদল, স্তনের চামড়া কুঁচকে যাওয়া, খসখসে ভাব, রঙের বদল স্তন ক্যানসারের লক্ষণ।

হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে থাকা, বার বার জ্বর, সংক্রমণ, ত্বকে কালশিটে পড়ে যাওয়া, এ গুলি রক্তের ক্যানসারের উপসর্গ। আবার জরায়ুর মুখের ক্যানসার নিয়েও এখন সচেতন করা হচ্ছে সর্বস্তরে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মেয়েদের খেয়াল রাখতে হবে ঋতুস্রাব অনিয়মিত হচ্ছে কিনা। সাদা স্রাব, অতিরিক্ত রক্তপাত, ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, সন্তানধারণে সমস্যা, যৌন মিলনের সময় ব্যথা জরায়ুর মুখ বা জরায়ুর ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন এবং এমন কোনও লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Advertisement
আরও পড়ুন