Benefits of Green Pea's Peel

কড়াইশুঁটি খেয়ে খোসা ফেলে দেন! জানেন, তাতে কী কী পুষ্টিগুণ রয়েছে? কী ভাবে খাবেন?

পৌষ সংক্রান্তির আগে বা পরে বাঙালি পরিবারে এক বার অন্তত কড়াইশুঁটির কচুরি খাওয়া হয়েই থাকে। কিন্তু কচুরির জন্য কড়াইশুঁটির পুর বানানোর পরে খোসাগুলো কি ফেলে দেন?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:২০

ছবি: শাটারস্টক।

শীতে বাজারের থলে থেকে কড়াইশুঁটি বেরোলে খোসা ছাড়িয়ে কয়েকটা মুখে ফেলে দেওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। এতেই মনে হয়, শীত এসে গেল। সেই সঙ্গে মনে মনে আশা এবং পরিকল্পনা কড়াইশুঁটির কচুরির জন্যও। পৌষ সংক্রান্তির আগে বা পরে বাঙালি পরিবারে এক বার অন্তত কড়াইশুঁটির কচুরি খাওয়া হয়েই থাকে। কিন্তু কচুরির জন্য কড়াইশুঁটির পুর বানানোর পরে খোসাগুলো কি ফেলে দেন? তবে জেনে রাখুন খোসার সঙ্গে সঙ্গে ফেলা যাচ্ছে অনেকখানি জরুরি পুষ্টিও।

Advertisement

কেন গুরুত্বপূর্ণ?

কড়াইশুঁটির দানার মতো, তার খোসাতেও রয়েছে ভিটামিন এবং খনিজ। আমেরিকার ক্লিভল্যান্ডের চিকিৎসক মিশেল কার্ন বলছেন, ‘‘কড়াইশুঁটির বাইরের খোলসে রয়েছে ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং ফোলেট। সব ক’টি উপাদানই আমাদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য জরুরি।’’

১। ভিটামিন এ: মিশেল জানিয়েছেন, ত্বক, চোখ, দাঁত, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, প্রজনন ক্ষমতা, শারীরিক বিকাশের জন্য ভিটামিন এ অত্যন্ত জরুরি। পুরুষ এবং মহিলাদের নিয়মিত যে পরিমাণ ভিটামিন এ-র প্রয়োজন হয়, তার অর্ধেকের বেশি ভিটামিন এ মজুত আছে মাত্র ১০টি কড়াইশুঁটির খোসায়।

— ফাইল চিত্র।

২। ভিটামিন কে: বয়স্কদের হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে কার্যকরী ভিটামিন কে। অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যায় এবং রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যাতেও কাজে লাগে। ভিটামিন কে-র অভাবে মহিলাদের ঋতুস্রাবের সময় রক্তপাত বেশি হয়। অল্প আঘাতে কালশিটে পড়ে, অল্প কাটাছড়ায় রক্তপাতও হয় বেশি।

৩। ভিটামিন বি৬: মস্তিষ্কের বিকাশ, স্নায়ুতন্ত্র এবং রোগপ্রতিরোধ শক্তিকে ভাল রাখতে সাহায্য করে।

৪। ফোলেট: নতুন লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে, ডিএনএ সিন্থেসিসের জন্য, ক্ষতিগ্রস্ত কোষের মেরামতির জন্য জরুরি ফোলেট। যে মহিলারা মা হতে চলেছেন, তাঁদের স্বাস্থ্যের জন্যও ফোলেট জরুরি। কড়াইশুঁটির খোলায় সেই ফোলেট রয়েছে।

৫। ম্যাগনেসিয়াম: এর অভাবে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা বাড়তে পারে, ঝুঁকি বাড়ে অ্যালঝাইমার্স, হৃদরোগ, টাইপ টু ডায়াবিটিসেরও। তা ছাড়া ম্যাগনেসিয়াম শরীরের পেশি এবং স্নায়ুর কাজও নিয়ন্ত্রণ করে।

৬। আয়রন: লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধশক্তিকে ঠিক রাখতে, হরমোনের সংশ্লেষে এবং মজ্জার স্বাস্থ্যের জন্যও আয়রন জরুরি।

ছবি: আইস্টক।

কড়াইশুঁটির খোসা খাবেন কী ভাবে?

কড়াইশুঁটির খোসায় থাকা পুষ্টিগুণ আরও অনেক খাবার থেকেই খাওয়া যায়। তবে 'নেচার' পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে কড়াইশুঁটির খোসাকে খাবারের তালিকায় রাখা যেতেই পারে। স্যুপ বানিয়ে বা ভেজেও খাওয়া যেতে পারে কড়াইশুঁটির খোলা। তবে খাওয়ার আগে পরিষ্কার দেখতে কড়াইশুঁটির খোলাই বেছে নিন।

কড়াইশুঁটির খোসার স্যুপ

খোসাগুলিকে বোঁটা এবং আঁশ বাদ দিয়ে ২ ঘণ্টা মতো নুন-জলে ভিজিয়ে রেখে দিলে, তাতে থাকা সমস্ত ক্ষতিকর পদার্থ চলে যাবে। নরমও হবে।

জল থেকে তুলে প্রেসার কুকারে ওই খোসা দিয়ে, এক মুঠো কড়াইশুঁটি, মাখন, জল এবং দুধ দিয়ে ৪টি সিটি হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে মিক্সিতে মিহি করে বেটে নিন। তার পর ছাঁকনিতে ছেঁকে স্বাদ মতো নুন, চিনি, মরিচ বা পছন্দমতো মশলা দিয়ে ফুটিয়ে নিলেই তৈরি স্যুপ।

ছবি: পিঙ্ক লেমন ট্রি।

কড়াইশুঁটির খোসা ভাজা

স্যুপের মতোই কড়াইশুঁটির খোসার বোঁটা এবং আঁশ বাদ দিয়ে নুন-জলে ডুবিয়ে রাখুন। তার পরে বেসন, নুন, লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে তাতে খোসাগুলি ডুবিয়ে ডুবোতেলে ভেজে নিন।

সতর্কতা

তবে একই সঙ্গে পুষ্টিবিদেরা বলছেন অতিরিক্ত কোনও কিছুই ভাল নয়। রোজই যদি কেউ কড়াইশুঁটির খোসা খেতে শুরু করেন, তবে তাতে পেট ফাঁপা এবং হজমের সমস্যাও হতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন