পুজোর পাঁচটি দিনের জন্য কী কী কিনলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত? ছবি- সংগৃহীত
বাঙালির বারো মাসে হাজার পার্বণ। তবু নানান উৎসবের ভিড়েও বাঙালি সারা বছর প্রহর গোনে দুর্গাপুজোর জন্য। সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে আর মাত্র কয়েক দিন। শহর সেজে উঠছে উৎসবের রোশনাইয়ে। মণ্ডপ তৈরির কাজেও এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সেই সঙ্গে জোরকদমে চলছে পুজোর সমাগমে নিজেকে আলাদা করে চেনানোর প্রয়াস। শহরের ফুটপাথ থেকে বিলাসবহুল শপিং মল— পুজোর কেনাকাটা উপলক্ষে থিকথিক করছে ভিড়।
বিগত দু’বছরে অতিমারির কারণে উৎসবের জৌলুস কেমন যেন ম্লান হয়ে গিয়েছিল। পুজোর দিনগুলিতেও অনেককেই কাটাতে হয়েছিল নিভৃতবাসে। উৎসবের আলো থেকে দূরে ছিলেন— এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম ছিল না। এ বছর কিছুটা হলেও কোভিড স্থিতিশীল। তাই প্রাণ খুলে আনন্দ করার জন্য তৈরি হচ্ছেন সকলে।
বাঙালির উৎসব-উদ্যাপনের অন্যতম অঙ্গ সাজগোজ। সাধারণ মানুষ থেকে তারকা— পুজোর সাজে পাল্লা দিতে পিছিয়ে নেই কেউই। টলিপাড়ায় এখনও পুজোর ছুটি পড়েনি। জোরকদমে চলছে শ্যুটিং। পুজোর ছুটির আগে যতটা কাজ গুছিয়ে রাখা যায়। ব্যস্ততার মধ্যেই তারকারা সেরে নিচ্ছেন পুজোর কেনাকাটা। পুজোর পাঁচটি দিনের জন্য কী কী কিনলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
স্বস্তিকা বললেন, ‘‘কিচ্ছু কেনা হয়নি। একটি ওয়েব সিরিজের শ্যুটিং চলছে। কাজ ছাড়া এখন অন্য কোনও দিকে মন দিতে পারছি না। প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যে কাটছে দিনগুলো। তা ছাড়া পুজো উদ্বোধন, পুজো পরিক্রমা রয়েছে। সেখানে কোন শাড়ির সঙ্গে কী ব্লাউজ পরব, কেমন গয়না পরব, সে সব নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। পুজোর জন্য আলাদা করে আমি কিছু কিনি না। পুজোর আগে নতুন জামা কেনার উৎসাহ ছোটবেলাতেই ছিল। এখন পুজোতে প্রচুর ইভেন্ট থাকে। সেই জন্য পোশাক বানাতে দিই। কিন্তু এ বছর সেটাও ঠিক করে হয়নি। কারণ, এ বছর পুজোর আগে কাজের চাপ সত্যিই অনেক বেশি। গত দু-আড়াই মাস ধরে ভেবে আসছি, এই তো কাল কিনে নেব। পুজোর আর ১৩ দিন বাকি। সেই ‘কাল’ আর এল না। আসলে বারোমাসই আমার আলমারিতে ১০টা করে নতুন জামাকাপড় থাকেই। সেগুলোর থেকে পরতে পারি।’’
পুজোর সময় শাড়ি পরতে পছন্দ করেন অনেকেই। স্বস্তিকাও কি পুজোর দিনগুলিতে শাড়ি পরেই দেখা দেবেন? স্বস্তিকার উত্তর, ‘‘নির্ভর করছে কোথায় যাচ্ছি তার উপর। এখন যে হেতু বৃষ্টি হচ্ছে, ফলে রাস্তাঘাট কাদায় মাখামাখি। পুজোর উদ্বোধনে শাড়ি পরে যেতেই পছন্দ করি। কিন্তু শো থাকলে অন্য কথা। অনেকটা দূরে দূরে যেতে হয়। শাড়ি পরে যাওয়াটা একটু চাপের। সে ক্ষেত্রে লম্বা ঝুলের এথনিক কিছু পোশাক পরে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিংবা লং স্যুট পরে নিলাম। সে সব নিয়েও এখনও কিছু ভাবার সময় পাইনি। দু’একটা নতুন জামা রয়েছে। যেগুলো শো-এ পরে যেতে পারব। পুজোটা এই ভাবেই কাটবে মনে হচ্ছে।’
পুজোয় নিজের জন্য নতুন পোশাক কেনা ছাড়াও চলে উপহার বিনিময়ের পালা। প্রিয়জনদের কী উপহার দিলেন স্বস্তিকা? তাঁদের তরফ থেকেই বা কী পেলেন তিনি? স্বস্তিকা বললেন,‘‘পুজোতে বাবা-মায়ের তরফ থেকে উপহার মানে, হয় ফোন কিংবা মেকআপের জিনিসপত্র। নিজের জন্য কেনার সময় না হলেও বাবা-মায়ের পুজোর উপহার দেওয়া হয়ে গিয়েছে।’’ প্রেমের সম্পর্কে আসার পর শোভন-স্বস্তিকার এটা তৃতীয় পুজো। শোভনকে পুজোয় কী দিলেন অভিনেত্রী? প্রেমিকের কাছ থেকে বিশেষ কী উপহার পেলেন তিনি? স্বস্তিকার কথায়, ‘‘দু’জনেই দুজনকে কোনও উপহার এখনও পর্যন্ত দিয়ে উঠতে পারিনি। শোভন পুজোয় কলকাতায় থাকছে না। আমেরিকা যাচ্ছে। তবে শোভনের থেকে বেশ কিছু উপহার আমি পেয়েছি।’’
সাধারণ মানুষ থেকে তারকা— সময় বাঁচাতে অনেকেই এখন অনলাইনে কেনাকাটা করে নেন। স্বস্তিকা কি হাতে নিয়ে পরখ করে কিনতেই বেশি পছন্দ করেন? পর্দার রাধিকা বললেন,‘‘ অনলাইনে খুব ঠান্ডা মাথায় কেনাকাটা করতে হয়। অনেক কিছু দেখে শুনে বুঝে তার পর কিনতে হয়। কিন্তু তার পরেও খারাপ জিনিস আসে। এই জন্য অনেকে দোকানে গিয়ে কিনতেই বেশি পছন্দ করেন। অনলাইনে একেবারে কিনি না, এমন নয়। ১০০-২০০ টাকা হলেও ছাড় তো পাওয়া যায়! তবে নিজে গিয়ে কেনার একটা আলাদা মজা আছে।’’
টলিউডের পোশাকশিল্পী অভিষেক রায় স্বস্তিকার কাছের মানুষ। দাদা-বোনের সম্পর্ক। স্বস্তিকা চাইলেই তো দারুণ সব পোশাক চলে আসত! এ প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, ‘‘প্রতি বছর আমার বস্তা বস্তা নতুন জামা আসে অভিষেকের কাছ থেকে। এ বছর অভিষেকের ওখানে যাওয়ার সময়ই পাইনি। তবে একেবারে কিছু আসেনি, এমন নয়। অভিষেকের কাছ থেকে দুটো শাড়ি এসেছে।’’
পোশাক না হয় হল। কিন্তু মানানসই গয়না? অভিনেত্রী বললেন,‘‘বেশির ভাগ সময় আমি রুপোর গয়না পরি। ট্যান গোল্ডও পরি। বিভিন্ন জায়গা থেকে এগুলো আমি কিনি। যেখানেই যাই, পছন্দ হলে কিনে নিই। জমানো থাকে। বিভিন্ন পোশাকের সঙ্গে পরে নিই। আমি গড়িয়াহাট আর ধর্মতলা থেকে প্রচুর গয়না কিনি। মাস্ক পরে যাই। রাস্তার ধারের দোকানগুলোতে খুব সুন্দর গয়না পাওয়া যায়।’’