মাইক্রোওয়েভের ব্যবহারের সঙ্গে ক্যানসারের যোগ নিয়ে একাধিক গবেষণা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
ফ্রিজে রাখা সকালের ভাত, একেবারে ঝরঝরে লাগে মাইক্রোওয়েভের গুণে। সপ্তাহান্তে ছুটির দিনে কবাব, গ্রিল্ড ভেটকি, কিংবা খুদের পছন্দের পিৎজ়া সবই করেন ওই যন্ত্রটিতে। আবার শীতের সময়ে কেক তৈরি করতেও মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারের চল বাড়ে। কিন্তু এই যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে এক দলের মধ্যে বেশ আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা মনে করেন, মাইক্রোওয়েভের অতিরিক্ত ব্যবহার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু এমন ধারণার কি আদৌ কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে?
অভিজ্ঞরা বলছেন, মাইক্রোওয়েভ ইলেকট্রম্যাগনেটিক রেডিয়েশন-এর সাহায্য খাবার গরম বা রান্না করে থাকে। যা খাবারের মধ্যে থাকা জলের অণুকে আন্দলিত করে। ফলে সহজেই তাপ উৎপন্ন হয়। এই ধরনের তরঙ্গ স্বাস্থ্যের জন্য নিঃসন্দেহে খারাপ। তবে যদি নির্দিষ্ট সতর্কতা মেনে মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করা হয়, সে ক্ষেত্রে সরাসরি ক্যানসার হওয়ার কোনও ভয় থাকে না। মাইক্রোওয়েভের ব্যবহারের সঙ্গে ক্যানসারের যোগ নিয়ে একাধিক গবেষণা হয়েছে। তবে কোনও জায়গাতেই এ সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
আমেরিকার খাদ্য এবং স্বাস্থ্য নিয়ামক সংস্থা এবং ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন নন-আয়োনাইজ়িং রেডিয়েশন প্রোটেকশন এই দুই সংস্থার মত, মাইক্রোওয়েভ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি যদি নির্দিষ্ট রেডিয়েশনের সীমার মধ্যে যন্ত্রগুলি তৈরি করেন, সে ক্ষেত্রে শারীরিক কোনও ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। তবে কোনও ভাবে যদি যন্ত্রের মধ্যে রেডিয়েশন লিক করে, তখন অবশ্যই তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে আধুনিক সংস্থাগুলি যথেষ্ট তৎপর। এই ধরনের লিকেজ থেকে বাঁচতে তারা আধুনিক মানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে।
অনেকেই মনে করেন, মাইক্রোওয়েভে রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কিছু ক্ষেত্রে এই ধারণা যুক্তিসঙ্গত। মাছ, মাংস বা যে কোনও সব্জি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার উপর রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়া স্বাভাবিক। রান্নার সময় বুঝে ‘টাইমার’ সেট করা, রান্নায় পর্যাপ্ত জলের ব্যবহার এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। সঙ্গে মাইক্রোওয়েভের জন্য তৈরি বিশেষ পাত্র ব্যবহার করার উপরেও জোর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।